ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস’ উদযাপিত

sel‘ফার্মাসিস্ট: আপনার ওষুধ বিশেষজ্ঞ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস’। গোলটেবিল বৈঠক, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সেমিনারসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট লার্নিং নেটওয়ার্ক (জিডিএলএন) সেন্টারে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ।

মঙ্গলবার দিনব্যাপী আয়োজনে রোগীর স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধের গুণমান রক্ষা, ফার্মাসিস্ট পেশার উন্নয়নে প্রস্তুতকারক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন দেশের সেরা কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা।

সকাল দশটায় ‘কীভাবে ফার্মাসিউটিক্যাল পন্যের মান বৃদ্ধি করা যায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, কেবল বিপণন নয়, পন্যের মান উন্নয়ন ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার বিষয়টিও সবাইকে ভাবতে হবে।

সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডের তানভীর সজীব বলেন, বিশ্বখ্যাদ্য সংস্থার তথ্য মতে, সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করার কারণে প্রায় ৫০ শতাংশ ইনসুলিন বা ভ্যাকসিন জাতীয় পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরও ভয়াবহ। বেশিরভাগ ঔষধের দোকানগুলোই কুল চেইন ম্যানেজমেন্ট মেনে চলে না।’

এসিআই এর মার্কেটিং বিভাগের প্রধান মাজহারুল ইসলাম বলেন, ওষুধের ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান বজায় থাকা আবশ্যিক শর্ত। অনেক সময় অধিক লাভ করতে গিয়ে প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলি মানহীন কাঁচামাল আমদানি করে থাকে। এতে ওষুধ উপকারের বদলে বিষে পরিণত হয়। কঠোর আইন প্রণয়ণের মাধ্যমে এগুলো বন্ধ হওয়া উচিত।

গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের নাজনীন সুলতানা বলেন, ‘আমাদের দেশে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট ছাড়াই ওষুধ সংরক্ষণ ও বিতরণ করা হয়ে থাকে। প্যারসিটামল বা ওমিপ্রাজলের মতো ঔষুধও বেশি মাত্রায় প্রয়োগ হলে যে শরীরের ক্ষতির কারণে হতে পারে সেটাও তারা জানে না।’

ওষুধ শিল্পের উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর ভূমিকা সম্পর্কে বক্তরা বলেন, ‘ভালো ফার্মাসিস্ট হতে হলে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের পাশাপশি নিজের কাজটাকে ভালোবাসতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত বর্তমান সময় ও সমাজ বাস্তবতার সাথে মিল রেখে কারিকুলাম তৈরি করা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রচুর ব্যবহারিক কাজেরও সুযোগ দিতে হবে।’

বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস এর উদ্বোধন করেন ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারপারসন ইভা রহমান কবির। তিনি বলেন, গবেষণা খাতটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বাজার ব্যবস্থা ও যুগের সঙ্গে তাল রেখে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম সাজানো হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় দীক্ষিত হয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন সাধন করতে সক্ষম হবে।’  আলোচনা সভায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আহমেদ আতাউল হাকিমসহ দেশের বিখ্যাত কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে ফার্মাকোভিজিলেন্স এর প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন রোস বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আফরোজ জলিল।