কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

গভীর শোক এবং বিনম্র শ্রদ্ধায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষা শহীদদের স্মরণে একুশের প্রথম প্রহর থেকেই শুরু হয় দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিকতা।

unnamed
২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ১ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চোধুরী। এরপর একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, হলসমূহ, শাখা ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ, বিভিন্ন বিভাগসমূহ, বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও আঞ্চলিক সংগঠনগুলো ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়।
শ্রদ্ধা জানানোর আগে রাত ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হয় দিবসটি পালনের প্রস্তুতি। দলে দলে কালো ব্যাজ ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে জড়ো হতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘প্রতিবর্তন’ একুশের গানে গানে স্মরণ করে ভাষা শহীদদের। অনুপ্রাস কণ্ঠচর্চা কেন্দ্র পরিবশন করে কবিতা আবৃত্তি। তারপর রাত ১১.৩০ মিনিটে দিবসটির উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা ভাষা সংগ্রামের কিংবদন্তী শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের দৌহিত্রী, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আরমা দত্ত।
আরমা দত্ত তার বক্তব্য বলেন, 'ভাষা সৈনিকদের রক্তের দামে আমরা রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেয়েছি। আমরা তাদের কোনও দিন ভুলবনা। তাদের আদর্শ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করে আমাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।’ শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে স্মরণ করে আরমা দত্ত বলেন, ‘দাদু গণপরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব উত্থাপনের পর আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, দাদু তুমি এত বড় কাজ করে ফেললে আমাকে তো কিছু বললে না। তিনি আমাকে বললেন আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি শুধু।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘আজ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পরিবারের মানুষের আগমন ঘটলো। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন এই কুমিল্লার তথা জাতির সাহসী সন্তান। জাতির এই সূর্যসন্তানদের আদর্শকে লালন করে আর সাহসকে পুঁজি করেই তরুণ প্রজন্মকে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কাজ করতে এগিয়ে যেতে হবে।’
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব), প্রফেসর ড. আবু তাহের, শিক্ষক সমিতির সভাপতি রশিদুল ইসলাম শেখ, সাধারণ সম্পাদক ড. স্বপন চন্দ্র মজুমদারসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারী নেতৃবৃন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বাংলা বিভাগের উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার অভিমুখে অনুষ্ঠিত হয় ‘অমর একুশে প্রভাতফেরি।’