বিড়ালের উপর চুরির দায় চাপিয়ে বিপাকে চবি শিক্ষক!

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের কাছে আর বাসা ভাড়া দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফিন্যান্স বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আ.ন.ম. আব্দুল মুক্তাদির। দুই মাসের মধ্যে ভাড়াটিয়া শিক্ষার্থীদের বাসা ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একই সাথে শিক্ষার্থীদের থেকে বকেয়া ভাড়া ৪০ শতাংশ মওকুফের বিষয়েও একমত হয়েছেন সাবেক এই শিক্ষক। ওই বাসার ভাড়াটিয়া ছাত্রীদের জামাকাপড়সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চুরির অভিযোগের পর বিড়ালের উপর দায় চাপিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। 

আব্দুল মুক্তাদিরের বাসা

এই ঘটনায় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক অধ্যাপক আ.ন.ম. আব্দুল মুক্তাদির। তবে নতুন কোনও শিক্ষার্থীকে ভাড়া না দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ছাত্রীদের সামান্য কিছু জিনিসপত্র চুরি হয়েছিল। সেগুলো কে বা কারা চুরি করেছে তা আমি জানি না। তবে বিষয়টি প্রক্টর এসে সমাধান করেছেন।’

প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাড়ির মালিক এ বাসায় আর নতুন শিক্ষার্থী উঠাবেন না। বর্তমান ভাড়াটিয়া শিক্ষার্থীদেরও আগামী দুই মাসের মধ্যে এ বাসা ছেড়ে দিতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের হারানো জিনিসপত্রের ক্ষতিপূরণ দেবেন বাসার মালিক।’

প্রক্টর বলেন, ‘তিনি শিক্ষার্থীদের ৪০ শতাংশ ভাড়া মওকুফে রাজি হয়েছেন। তবে যারা ইতোমধ্যে ভাড়া দিয়ে দিয়েছে তারা বাদে বাকিরা এপ্রিল মাসের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগ পর্যন্ত ৪০ শতাংশ ভাড়া কম দেবে। তিনি সবকিছু মেনে নেওয়ায় আমরা আর আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি না।’

এর আগে সোমবার (১৯ অক্টোবর) জামাকাপড়সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চুরি, জোরপূর্বক ভাড়া আদায় ও হয়রানির ঘটনায় প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ জানায় কয়েকজন ছাত্রী। ওইসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, করোনার ছুটিতে বাড়ি চলে যাওয়ার দীর্ঘদিন পর দরকারী জিনিসপত্র নেওয়ার জন্য কুমিল্লা থেকে ক্যাম্পাসে আসলে বাসায় ঢুকতে তাদের বেগ পেতে হয়। এসময় ৪০ শতাংশ ভাড়া মওকুফের নোটিশ মানেননি বাড়ির মালিক। এছাড়া ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জাম ও আসবাব যথাস্থানে না থাকায় এবং খুঁজে না পাওয়ায় অভিযোগ জানালে বাড়ির মালিক অধ্যাপক আ.ন.ম. আব্দুল মুক্তাদির জানান এটা বিড়ালের কাজ।

প্রসঙ্গত, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ভাড়াটিয়া ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগে আলোচনায় এসেছিলেন আব্দুল মুক্তাদির। গত ৬ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী ওই বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরকে ছুরি নিয়ে ধাওয়া করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দায়ের করলে প্রক্টরিয়াল বডি বিষয়টি মিটমাট করেন। এছাড়া গত বছর ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সময় বাসায় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের আশ্রয় দিলেই জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন: চবি শিক্ষকের বাসায় ভাড়াটিয়া ছাত্রীদের আসবাব চুরি, দায় বিড়ালের!