তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

প্রয়াত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও আলোকচিত্রী মিশুক মুনীরের দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ (ডিইউএফএস)।

শুক্রবার (১৩ আগস্ট) তারেক মাসুদ এবং মিশুক মুনীরের  স্মরণে ‘জীবন যার চলচ্চিত্র’ শিরোনামে স্মৃতিচারণামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিইউএফএস। আলোচনা অনুষ্ঠানটি তাদের ফেইসবুক পেইজে সম্প্রচার করা হয়।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই দুই গুণী ব্যক্তির স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল সংলগ্ন সড়কদ্বীপে সড়ক দুর্ঘটনার স্মৃতি স্থাপনায় প্রদীপ প্রজ্বালন করে ঢাকা ডিইউএফএস।

অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ বলেন, তরুণ প্রজন্ম তাদের মাঝে তারেক মাসুদকে পায়। তারেক মাসুদ সবসময় পরবর্তী প্রজন্মের জন্য চিন্তা করতেন। তরুণ নির্মাতাদের তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহিত করতেন। তারেক মাসুদ আমাকে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আমাকে তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধু মিশুক মুনীরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আমি মুগ্ধ হয়েছি সেদিন। দশবছর হয়ে গেলো তারেক মাসুদ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তিনি আমাদের মাঝে নানানভাবে আছেন।

তারেক মাসুদের ছোটো ভাই নাহিদ মাসুদ বলেন, তারেক ভাই অডিয়েন্সের প্রতিক্রিয়া নিয়ে সচেতন ছিলেন। তাই তিনি প্রদর্শনীতে থাকতেন। তিনি বুঝতে চাইতেন, দর্শকের সঙ্গে তিনি ঠিকঠাক কমিউনিকেট করতে পারছেন কিনা। তারেক ভাইয়ের সঙ্গে আমি যখন জয়েন করি, তখন তিনি আমেরিকা থেকে মুক্তির গান চলচ্চিত্রের কাজ শেষ করে এসেছেন। তিনি আশা করেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এই চলচ্চিত্রটি সিনেমা হলগুলোতে দেখানো হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি।

মিশুক মুনীরের সহধর্মীনি মঞ্জলী মুনীর বলেন, মিশুকের বরাবরই ফটোগ্রাফির প্রতি ঝোঁক ছিলো। সাংবাদিকতায় পড়ার সময় তাঁর বড় ভাই একটি ক্যামেরা কিনে দেন। সে সাংবাদিকতা পড়েছে ঠিক, কিন্তু তাঁর আসল ঝোঁক ছিলো ক্যামেরায়। ক্যামেরা হাতে পেলে সে বাচ্চাদের মতো হয়ে যেতো।তিনি ছবির মানুষ ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সময়ও তিনি দেশি-বিদেশি অনেক মিডিয়ায় কাজ করেছেন। উনার মেইন ফোকাসই ছিলোই ছবি তোলা। উনি একজন ছবির মানুষ ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের আজকের দিনে (১৩ আগস্ট) ‘কাগজের ফুল’ সিনেমার শুটিং স্পট দেখে মানিকগঞ্জের শালজানা থেকে ঢাকা ফেরার পথে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর, প্রডাকশন সহকারী ওয়াসিম, জামাল ও চালক মুস্তাফিজুর রহমান নিহত হন।