ভবন নির্মাণে রুয়েটে কাটা হচ্ছে গাছ, ক্ষোভ-প্রতিবাদ

উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) নতুন ভবন নির্মাণের জায়গার জন্য ৩৫টি গাছ কাটা পড়বে। ইতোমধ্যে ১৫টি গাছ কেটে এক লাখ ২৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৬-৭টি গাছ অর্ধশতাব্দী পুরোনো। 

রুয়েট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন নির্মাণের জায়গার জন্য গাছগুলো কাটা হচ্ছে। মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন চাইলেও নতুন করে ভবনের জায়গা পরিবর্তন করা সম্ভব না।

এদিকে গাছ কাটার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রুয়েটের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছে পরিবেশ আন্দোলন নামে একটি সংগঠন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পরিবেশ ধ্বংস করে আমরা উন্নয়ন চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরিত্যক্ত জায়গা রয়েছে। সেখানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হোক।

ভবন নির্মাণে কাটা পড়বে মোট ৩৫টি গাছ

পর্যটক তানভীর অপু বলেন, আজ দেশের একটি সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের সামনে দাঁড়িয়ে গাছ কাটার প্রতিবাদ করতে হচ্ছে; এটা লজ্জার বিষয়। রাজশাহী বিশ্বের কাছে ‘গ্রিন সিটি’ হিসেবে পরিচিত। এই গাছগুলো কাটায় পাখিরা তাদের বাসা হারালো। এখানে অনেক পরিত্যক্ত ভবন আছে, অনেক খালি জায়গা আছে সেখানে ভবনগুলো করতে পারতো। বাংলাদেশের সবচেয়ে উষ্ণ শহর রাজশাহী। গাছগুলো যদি কেটে দেয় তাহলে শহরের কী হবে?

পরিবেশ আন্দোলনের সদস্য সচিব নাজমুল হোসেন রাজু বলেন, আমরা উন্নয়নের পক্ষে। তবে যেখানে অপরিত্যক্ত ভবন আছে, শ্রেণিকক্ষ আছে সেগুলো সচল না করে শতবর্ষী গাছ কেটে শত শত পাখির আবাস নষ্ট করা গ্রিন সিটিতে মানায় না।

গাছ কাটার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রুয়েটের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছে পরিবেশ আন্দোলন

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উত্তর পাশে বেশ কয়েকটি পুরোনো গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। সেখানে কেউ গাছ কেটে ছোট করছে, কেউ গাছের ডালাপালা কেটে ভ্যানে তুলছে। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে সবাই দ্রুত সেখান থেকে চলে যান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে গাছগুলো লাগানো হয়েছিল। এখন নতুন প্রশাসনিক, একাডেমিক ও আবাসিক ভবন নির্মাণের জায়গার জন্য এসব গাছ কাটা হচ্ছে। সম্প্রতি ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি আবাসিক ভবন, তিনটি একাডেমিক ভবন ও একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ভবন হবে ১০ তলার। গাছগুলো ভবন নির্মাণের জায়গায় পড়ায় কেটে ফেলা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেন বলেন, আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু ভবন নির্মাণ করা হবে। ভবনের জায়গার জন্য গাছগুলো কাটা হয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য অনেক আগেই সয়েল টেস্ট (মাটি পরীক্ষা) করা হয়েছে। ফলে এখন চাইলেও নতুন করে জায়গা পরিবর্তন করা সম্ভব না।