শাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছেন ছাত্রীরা। আন্দোলনরত এই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী জানান, শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ক্যাম্পাসের গোল চত্বরে একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশের সময় আমরা বাধা দিই। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। অ্যাম্বুলেন্সের পেছন পেছন এসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনরতদের মাঝে ঢুকে পড়েন। একপর্যায়ে আন্দোলনে সংহতি জানাতে যাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন তারা। এমনকি হামলাকারীদের হাত থেকে তাদের বাঁচাতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন কয়েকজন ছাত্রীও।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মৃন্ময় দাস ঝোটনের মদদে ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান, আশরাফ কামাল আরিফ, সজিবুর রহমান, ঋষাণ তন্ময়, মাহবুবুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, শফিউল হক রাব্বি, রিশাদ ঠাকুর, সুমন সরকারসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এ হামলা চালান।

এ সময় ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ এবং প্রক্টর ড. আলমগীর কবীর উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।

হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ কামাল আরিফ বলেন, ‘আমরা একটা অ্যাম্বুলেন্সকে পথ করে দিতে গেলে তারা বাধা দেয়। তখন এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটু হাতাহাতি হয়। ’

এ বিষয়ে প্রক্টর ড. আলমগীর কবীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটি অ্যাম্বুলেন্সকে পথ করে দিতে সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী যান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স যেতে বাধা দিলে একটু হাতাহাতি হয়।’

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হল প্রভোস্টের অসদাচরণের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে আন্দোলনে নামে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। সেদিন রাত ৩টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন বন্ধ করে পরদিন শুক্রবার দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। আলোচনা শেষে হল প্রভোস্ট অসুস্থ থাকায় সহকারী হল প্রভোস্ট ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা কনক খানকে ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট করে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। এদিকে এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হলেও দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন তারা। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত হল প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি মেনে নিতে আল্টিমেটাম দেন।