রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ড্রেন নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতর থেকে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ঠিকাদার বলছেন তিনি কিছুই জানেন না।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর কাজে অনিয়ম পাওয়ায় তিনবার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে মুচলেকা দিয়ে ফের কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতর সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ২০২০ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর একনেকে ৫১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেটের একটি প্রকল্প অনুমোদন পায়। ওই প্রকল্পের অধীনে সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়কে ড্রেনেজ সিস্টেম আওতায় আনতে ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পাঁচ শতাংশ কমে ১৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় ট্রেন্ডারের মাধ্যমে যৌথভাবে এ কাজ পায় মাইশা কনস্ট্রাকশন ও হোসাইন এন্টারপাইজ। যার ওয়ার্কঅডার দেওয়া হয় ২০২০ সালের নভেম্বরের মাসে।
তবে কাজ শুরুর পর থেকে ঢালাইয়ের নিচে পর্যাপ্ত বালু না দেওয়া, কিউরিং না করা, শাটারিং বাঁকা, ড্রেন বাঁকা করাসহ একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। কয়েকবার মৌখিকভাবে সর্তক করার পরও অনিয়ম চলতে থাকায় দুইবার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শোকজ করা হয়। পরবর্তীতে কাজ বন্ধ করে দেয় প্রধান প্রকৌশলী। পরে মুচলেকা দিয়ে ফের কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাইড পরিদর্শনে গিয়ে, সিমেন্ট ব্যবহারে সিম-১ এর জায়গায় সিম-টু দেখতে পায় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতরের প্রধান প্রকৌশলী শাহরিয়ার খন্দকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়। উত্তর সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ৩০ জানুয়ারি অনিয়মের সত্যতা যাচাইয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতর।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইমরুল হাসান, সদস্য সচিব প্ররিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতরের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক কামারুজ্জামান হিরো।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দেখভালের দায়িত্বে থাকা নওশাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় সব ধরনের কাজ বন্ধ রয়েছে। আমাদের কোনও কাজে অনিয়ম হয়নি। শোকজও করা হয়নি।
সার্বিক বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতরের প্রধান প্রকৌশলী শাহরিয়ার খন্দকার বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও সুপারিশের ভিত্তিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেস্ট কোয়ালিটির কাজ করিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃৃপক্ষ বদ্ধ পরিকর বলে জানান তিনি।