বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতাকারীর নামে ঢাবিতে ট্রাস্ট ফান্ড, সমালোচনার মুখে বন্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জন্য প্রয়াত সাংবাদিক এ জেড এম এনায়েতুল্লাহ খানের নামে প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্ট ফান্ড সমালোচনার মুখে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এনায়েতুল্লাহ খানের নামে অভিযোগ, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তীব্র সমালোচক ছিলেন এবং তার প্রতিষ্ঠিত সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এছাড়া পত্রিকাটি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতীয় রক্ষীবাহিনী কর্তৃক সম্পৃক্ত তথাকথিত ‘নৈরাজ্যে’র সম্পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করেছিল।

এর আগে, মঙ্গলবার (১০ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য লাউঞ্জে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘এনায়েতুল্লাহ খান স্মৃতি ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠার জন্য এনায়েতুল্লাহ খানের মেয়ে নাসরীন জামান ২৫ লাখ টাকার একটি চেক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের কাছে হস্তান্তর করেন।

এ সময় ছিলেন– উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, এনায়েতুল্লাহ খানের ভাই রাশেদ খান মেনন, এমপি, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ এবং দাতা পরিবারের সদস্য আবু সালেহ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান।

এই ট্রাস্ট ফান্ডের আয় থেকে প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থীকে একটি স্বর্ণপদক এবং কয়েকজন মেধাবী ও আর্থিক অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে ‘এনায়েতুল্লাহ খান স্মৃতি ট্রাস্ট ফান্ড’ বৃত্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

সে সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এই ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠার জন্য দাতা নাসরীন জামানকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। এই ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত ও উপকৃত হবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন।

তবে এই ফান্ড গঠনের পর কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে এনায়েতুল্লাহ খানের ভূমিকা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে সমালোচনা শুরু হয়। সমালোচনার প্রেক্ষিতেই উপাচার্য এই ট্রাস্ট ফান্ডের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের কিছু বন্ধু আছে যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান, তাদের বিভিন্ন ধরনের উদ্দেশ্য থাকে, সেগুলোকে সায় দেওয়ার কোনও কারণ নাই। যে সব তথ্য পেয়েছি, সেগুলোর আলোকে আমরা সিদ্ধান্তে উপনীত হবো।’

ফান্ড বাতিল হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটির সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ, এটি এখনও শুরুই হয়নি। এটা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপপ্রয়াস। যে কোনও তথ্য পেলে খুব সাবধানতার সঙ্গে সেগুলো বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।’