হলে থাকতে পারবেন না জাবির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা

আবাসিক হলগুলোতে সিট সংকটের কারণে আপাতত হলে অবস্থান করতে পারবেন না জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২০-২১ সেশনের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। গত ২৪ এপ্রিল হল প্রাধ্যক্ষ কমিটির আসন বণ্টন বিষয়ক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে গত ৯ মে প্রথম বর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ক্লাস রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও হল বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়।

এতে বলা হয়েছে, প্রথম বর্ষে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের এই মুহূর্তে হলে সিটের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে না। আপাতত তাদের বিভিন্ন হলে সংযুক্ত করা হবে। পরে হলে আসন খালি হওয়া সাপেক্ষে নিজ নিজ হল প্রাধ্যক্ষ পর্যায়ক্রমে তাদের জন্য হলে সিট বরাদ্দের ব্যবস্থা করবেন।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের এই মুহূর্তে হলে সিট বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে না বিধায় ঢাকা থেকে এসে তাদের ক্লাস করার সুবিধার্থে বাসের ব্যবস্থা থাকবে।

এদিকে দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থান করতে পারবেন না জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

লোকপ্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। এটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জেনে এখানে ভর্তি হয়েছি। প্রত্যাশা ছিল হলে থাকলে পরিবারের খরচ কিছুটা লাঘব হবে। কিন্তু এখন দেখলাম হলে সিট সংকট বলে আমরা অবস্থান করতে পারবো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা উচিত।’

বাংলা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হলে অবস্থান করতে না দেওয়া হলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। আমার পরিবারের পক্ষে এত খরচ বহন করা কঠিন। কী করবো ভেবে পাচ্ছি না।’

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি রাকিবুল রনি বলেন, ‘একেবারেই অবিবেচনা প্রসূতভাবে নবীন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম ক্লাসটি সশরীরে করতে দেয়নি প্রশাসন। এখন তাদেরকেই আবার বিভিন্ন হলে বরাদ্দ দিলেও উঠতে বারণ করা হয়েছে। ২৩ মে থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হলে এই আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীরা কোথায় অবস্থান করে ক্লাস করবেন? সবার বাসা তো ঢাকাতে না। এই ধরনের লেজে-গোবরে সিদ্ধান্তে ভোগান্তির শিকার হয় বরাবরই শিক্ষার্থীরা। অথচ নির্মিতব্য হলগুলোর কাজ যথাসময়ে শেষ করতে নিয়মিত তদারকি করলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। নতুন হল উদ্বোধনের আগ পর্যন্ত এই নবীন শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে বরাদ্দকৃত হলে থাকতে দিতে হবে। এর কোনও বিকল্প নেই।’

উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘নতুন হলের কাজ শেষ হয়নি যার কারণে সিট সংকট আছে। হলগুলো উদ্বোধন হয়ে গেলে আর সংকট থাকবে না। ততোদিন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের একটু কষ্ট করতে হবে।’

উল্লেখ্য, আবাসিক হলগুলোতে সিট সংকটের কারণে গত ৯ মার্চ থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরেও অনেক শিক্ষার্থীর হলে অবস্থানের কারণেই এই সিট সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।