এক দশকে জাবিতে ভর্তি আবেদন ফি বেড়েছে ৩ গুণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গত ১০ বছরে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। এ বছর পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে ‘ডি’ ইউনিট ছাড়া বাকি গুলোর আবেদন ফি ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত বছর ৬০০ টাকা ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি আবেদন ফরমের ফি ছিল ৩৫০ টাকা। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ১৫০ টাকা বেড়ে হয় ৫০০ টাকা। ফি বৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা বজায় থেকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে হয় ৫৫০ টাকা, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ৬০০ টাকা এবং সর্বশেষ এ বছর (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে) ৩০০ টাকা বেড়ে ৯০০ টাকা হয়েছে।

যেভাবে ব্যয় হয় ভর্তি ফরম বিক্রির টাকা

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখার তথ্যানুযায়ী, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ ১২ কোটি ২৯ লাখ টাকা আয় হয়। ভর্তির যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে এ খাতে অবশিষ্ট ছিল ৯ কোটি টাকা। এই টাকা ভর্তি পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা পারিশ্রমিক বা সম্মানী হিসেবে নেন।

জানা গেছে, ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন ও কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে উপাচার্য তিন লাখ, দুই উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, সব অনুষদের ডিন ও ইনস্টিটিউটের প্রধানরা প্রত্যেকে পেয়েছেন দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকরা প্রত্যেকে এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাও পেয়েছেন এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা করে।

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে এই খাত থেকে আয় হয় প্রায় ২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে পরীক্ষা আয়োজনে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সম্মানী ভাতা বাবদ খরচ দেখানো হয় আট কোটি এক লাখ ২২ হাজার টাকা। এছাড়া পরীক্ষা পরিচালনায় অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয় দুই কোটি ২০ লাখ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষা থেকে আয়ের ৪০ শতাংশ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার বিধান থাকলেও, তা মানা হয়নি। এ নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ইউজিসি, যা এখনও চলমান।

আবেদন ফি বৃদ্ধির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, ‘এ বছর আমরা ইউনিট সংখ্যা কমিয়ে এনেছি। তাই ফরমের দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার কলা অনুষদের তিনটি ইউনিটকে একসঙ্গে করা হয়েছে, যেখানে এই তিন ইউনিটে আগে খরচ হতো এক হাজার ৪০০ টাকা। কিন্তু ইউনিট একটি করাতে সেখানে খরচ হবে ৯০০ টাকা। ডি ইউনিট ছাড়া বাকি চারটি ইউনিটেই আগের তুলনায় টাকা কমানো হয়েছে।’