জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভিসি অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে নতুনরা যাতে কোনও ধরনের র্যাগিংয়ের শিকার না হয়। র্যাগিংয়ের অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রমাণ সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য করবো না।’ রবিবার (২২ মে) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে র্যাগিং প্রতিরোধ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ভিসি আরও বলেন, ‘র্যাগিং প্রতিরোধে আমাদের তিনটি জায়গায় ভূমিকা রাখতে হবে। প্রথমত, রাতে র্যাগিং হচ্ছে কিনা তা তদারকির জন্য হল প্রভোস্টদের একটি কমিটি করার অনুরোধ করছি। শিক্ষার্থীরা যেই রুমে অবস্থান করবে তার সামনে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে করে কেউ র্যাগিংয়ের চেষ্টা করলে তাকে শনাক্ত করা সহজ হবে। দ্বিতীয়ত, বিভাগীয় প্রধানরা সিনিয়রদের সঙ্গে একটি পরিচয় পর্বের আয়োজন করবেন। যাতে সিনিয়ররা পরে পরিচিত হওয়ার জন্য নতুন শিক্ষার্থীদের চাপ না দেয়। তৃতীয়ত সাতশ' একরের বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা র্যাগিংয়ের বিশাল একটি জায়গা। এ জন্য প্রক্টরিয়াল টিম ও সিকিউরিটি গার্ডদের নজরদারি বাড়াতে হবে।’
এ সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুর হাছান নাঈম বলেন, ‘র্যাগিংয়ের ঘটনাগুলো সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিডিয়েট সিনিয়রদের দ্বারাই হয়ে থাকে এবং অধিকাংশ ঘটনা হলগুলোতে ঘটে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিভাগীয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনকে তৎপর হতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে মনিটরিং সেল গঠন করা গেলে যেকোনও বিষয়ে দ্রুত সাড়া পাওয়া যাবে বলে আমরা মনে করি।’
প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘হলগুলোর প্রভোস্টরা প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছে তাদের সমস্যা জানার জন্য। এই ধারা অব্যাহত থাকবে। কারও সঙ্গে র্যাগিংয়ের ঘটনা হলে সরাসরি প্রভোস্টকে জানানোর অনুরোধ করছি। আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘র্যাগিংয়ের বিষয়ে প্রক্টিরিয়াল টিম সদা তৎপর। র্যাগিং সংশ্লিষ্ট কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো। এক্ষেত্রে ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছে প্রত্যাশা থাকবে আমাদের সহাযোগিতা করার। এছাড়া হল প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো আমাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়, এজন্য তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের অনুরোধ করছি।’
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডিন, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ র্যাগিং রোধে বিভিন্ন পরামর্শ দেন।