দৃষ্টিহীনতার বাধা পেরিয়ে স্বপ্নে জয়ে গুচ্ছ পরীক্ষায় তারা

তারিফ মেহমুদ চৌধুরী অংশ নিয়েছেন গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের মানবিক বিভাগের (বি ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষায়। তবে বাকি পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে তার পার্থক্য দৃষ্টিহীন হয়েও স্বপ্ন জয়ে অংশ নিয়েছেন ভর্তি যুদ্ধে।

শনিবার (১৩ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে তারিফ ছাড়াও অংশ নিয়েছেন তৃণা আক্তার সেতু ও আকাশ দাস নামের দুই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে তাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। শ্রুতিলেখকের সাহায্যে পরীক্ষায় অংশ নেন তারা।

নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি দেওয়া তারিফ মেহমুদ চৌধুরী রাজবাড়ী থেকে এসেছেন মায়ের সঙ্গে। এইচএসসিতে ৪.৯২ পেয়ে পাস করেন। জন্ম থেকেই তিনি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।

তারিফ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিং এসেছিল। কিন্তু আমার প্রিয় বিষয় ইংরেজি। তাই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। পরীক্ষায় সাহায্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একজন শ্রুতিলেখক দেওয়া হয়েছে।’

আরেক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তৃণা আক্তার সেতু। বড় ভাইয়ের সঙ্গে এসেছেন গোপালগঞ্জ থেকে। মোকসেদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা তৃণা ম্যাগনিফাইং গ্লাস ছাড়া লেখা পড়তে পারেন না।

তৃণা বলেন, ‘পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ম্যাগনিফাইং গ্লাস সঙ্গে নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সহযোগী হিসেবে একজনকে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা ভালো হয়েছে।’

আরেক শিক্ষার্থী আকাশ দাস এসেছেন নরসিংদী থেকে। তিনি মিরপুর বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।

আকাশ দাস বলেন, ‘আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও এটাকে কোনও প্রতিবন্ধকতা মনে করি না। বাকিদের মতো ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের উপ-পরিচালক ডা. মিতা শবনম বলেন, ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর থেকে আমাদের জানানো হয়, তিন জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মেডিক্যালে পরীক্ষা দেবেন। আমরা সে অনুযায়ী তাদের জন্য ব্যবস্থা করি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের জন্য শ্রুতিলেখকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’