বন্ধুরা সবাই যেতে পারবেন না, তাই ক্যাম্পাসেই হলো গায়ে হলুদ

সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো হলুদের মঞ্চ। তরুণ-তরুণীর হলদে শাড়ি-পাঞ্জাবিতে চোখ আটকে যাচ্ছে পথচারীদের। এর মাঝে লাল নীল আলোর ছন্দ দিয়ে সাজানো স্টেজে বন্ধু-বান্ধবীদের মাঝে সাদা পাঞ্জাবিতে বসে আছেন বর। সবার আনন্দ যেন আর বাঁধ মানছে না। এমনই এক বিয়ের প্রথম পর্ব গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে। 

সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামের পাশে বন্ধুর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান আয়োজন করেন বিভাগের সহপাঠী ও জুনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, বরের নাম রাকিবুল ইসলাম রানিম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে বিভাগের শিক্ষক, বন্ধুবান্ধব ছাড়াও বিভাগের জুনিয়রদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

iu2

ভিন্নধর্মী এ আয়োজনে হতবাক অনেকেই। দর্শনার্থীরাও সবাই একটু-আধটু উঁকি দিয়ে দেখছেন, আসলে কী চলছে! কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা একেবারেই নতুন।

থালায় সাজানো পায়েস, ফলমূল আর বিভিন্ন মিষ্টান্ন, কেক আর সাউন্ড বক্সের গানের তালে বিয়ের বাড়ির আমেজ তৈরির মধ্য দিয়ে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বরের সহপাঠীরা। 

হলুদ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান বলেন, রানিম আমাদের বিভাগের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র। তার বিয়ে সামনের মাসে। বন্ধুরা সবাই ফরিদপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না। এ কারণে ক্যাম্পাসেই তার গায়ে হলুদের আয়োজন করেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গায়ে হলুদের আমন্ত্রণ পেয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে খুব ভালো লেগেছে।

সহপাঠীরা জানান, বরের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কিন্তু সবার পক্ষে ওর বাসায় যাওয়া সম্ভব না। যার কারণে আজকে গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে।

iu3

এ ভিন্নধর্মী আয়োজনের অন্যতম একজন রানিমের সহপাঠী রাব্বুল জানান, গায়ে হলুদের এ আয়োজন বর এবং কনের পরিবারের লোকজন কেউ করেনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে সব বন্ধুরা উপস্থিত থাকতে পারবে না বলেই ক্যাম্পাসে সবার উদ্যোগে এমন ভিন্নধর্মী গায়ে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে।

রানিমের বান্ধবী তাবাসসুম বলেন, ক্যাম্পাসে এই প্রথম কোনও বন্ধুর গায়ে হলুদের আয়োজন করছি। সবাই আনন্দিত। সব বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে এই আয়োজন করেছি, এই আয়োজনে আমাদের বিভাগের সব সিনিয়র-জুনিয়ররা সহযোগিতা করেছেন। আমাদের বন্ধুর জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা।

বর রাকিবুল ইসলাম রানিম বলেন, আমার খুব ইচ্ছে ছিল ক্যাম্পাসে এমন একটি আয়োজন হোক। বন্ধু-বান্ধব ও ছোট ভাইরা মিলে আমার সেই আশা পূরণ করলো। সবাই মিলে এত চমৎকার একটি আয়োজনে করেছে যে আনন্দিত না হয়ে উপায় নেই। নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। সবার কাছে নতুন জীবনের জন্য দোয়া চাইছি।

জানা গেছেন, বিয়ের কনে হলেন ফরিদপুরের তাসবিন হাসান ইলা। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আর বরের বাসাও ফরিদপুর।