ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে শপথ গ্রহণ বুয়েট শিক্ষার্থীদের

সব ধরনের ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে শপথ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বেলা ১টা ২৫ মিনিটে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার সামনে সম্মিলিত কণ্ঠে এ শপথ পাঠ করেন শিক্ষার্থীরা।

শপথবাক্য পাঠকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা প্রতিজ্ঞা করছি যে বুয়েট ক্যাম্পাসে সব ধরনের সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে আমরা সম্মিলিতভাবে রুখে দেবো। নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার সমূলে উৎখাত করবো।’

শপথ শেষে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান জানিয়ে বলেন, ‘লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির চরমতম রূপ বারবার আঘাত হেনেছে আমাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে। ২০০২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছাত্ররাজনীতির অন্ধকার অধ্যায় ভয়ংকর দাগ রেখে গেছে আমাদের ক্যাম্পাসে। নিজেরা দীর্ঘ আন্দোলনে দাবি আদায় নিশ্চিত করে সব বাধা ডিঙিয়ে সব শিক্ষার্থী একতাবদ্ধ হয়ে যখন সুস্থ সুন্দর একটি পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করেছে, তখনই বুয়েট শিক্ষার্থীদের নিরপেক্ষ মনোভাবকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন স্বার্থানেষী মহল।’

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৩০ জুলাই সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে নাশকতার পরিকল্পনাকারী সন্দেহে বুয়েটের ২৪ জন বর্তমান শিক্ষার্থীসহ ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জামিন মঞ্জুর হয়। এ বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার ওপর আস্থা রেখে একটি সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার আশা করছি। যদি তারা প্রত্যেকেই দোষী প্রমাণিত হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবশ্যই তাদের বিপক্ষে থাকবে। যদি তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়, তবে তারা যেন কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হয়, সে ব্যাপারে বুয়েট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করবো।’

সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত কি না বা অন্য শিক্ষার্থীদের দ্বারা প্রভাবিত কি না, তদন্তের দাবি করে তারা বলেন, ‘জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। যদি তাদের এরূপ কোনও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে। যদি তারা নির্দোষ হয়, তাহলে তারা যেন সুস্থ একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে, তার দাবি জানাচ্ছি।’

বুয়েট ক্যাম্পাসে কোনও ধরনের মৌলবাদ চর্চা হবে না বলে জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, সব ধরনের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীদের যে দৃঢ় অবস্থান, তা থেকে আমরা কোনও অবস্থাতেই সরে আসবো না। যেকোনও ছাত্ররাজনীতি ও মৌলবাদ চর্চা বুয়েট ক্যাম্পাসে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না, তা সে যে দলেরই হোক না কেন।’