জাবিতে প্রথম বর্ষের সশরীরে ক্লাস শুরুর দাবিতে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২৩ সেশনের (৫২ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম সশরীরে শুরু, ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির সংস্কার ও ২০২৩-২৪ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা দ্রুত নেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তারা ভর্তি কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে পড়া ও প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু করতে না পারার সমালোচনা করেন।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য সংগঠন চিরকুটের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান লাবীব বলেন, ‘যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষের শ্রেণিকক্ষ পাঠদান চার থেকে ছয় মাস শেষ, সেখানে জাহাঙ্গীরগনর বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা এখনও প্রবেশই করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিট সংকটের কারণ দেখিয়ে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করেছে। অথচ করোনাকালীন অনলাইন ক্লাসের কারণে শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত সকল বিষয়ে সমন্বয় করে যথাসময়ে পাঠদান নিশ্চিত করা। কিন্তু জাবি প্রশাসন পাঠদান ব্যতীত সকল কিছু করতে আগ্রহী। তারা হল থেকে অছাত্রদের বের করতে পারে না। একটি বা দুটি বিজ্ঞপ্তি দেয়ালে টাঙিয়ে দিয়ে তারা তাদের দায়িত্ব শেষ করে।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সংগঠক সোহাগি সামিয়া বলেন, ‘অনলাইনে পাঠদানের কারণে শিক্ষার গুণগতমান নিচে নেমে গেছে। নেটওয়ার্কের দুর্ভোগ, ইন্টারনেট খরচ বহন করার সামর্থ্য দেশের সকল শিক্ষক—শিক্ষার্থীর নেই। জাবির নবীনতম শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস নিলে তাদের পড়াশোনার গুণগত মান হারাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগে থেকেই বলেছে নতুন ছয়টি হল তৈরি হয়ে গেলে আর গণরুম থাকবে না। দুর্ভাগ্যবশত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীদেরকে এখনও গণরুমে থাকতে হচ্ছে। ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থীদের গণরুমের মাধ্যমেই সশরীরে ক্লাস শুরু করতে হয়েছে। আর এখন ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থীদের ছয় মাস ঘরে বসিয়ে রেখে অনলাইনে ক্লাস শুরু করেছে।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ ভালো গবেষক তৈরি করা, শিক্ষার মান উন্নয়ন করা। কিন্তু জাবি প্রশাসন যে সকল উপায়ে অর্থ উপার্জন করা যায় সেগুলো নিয়েই ব্যস্ত। তারা কীভাবে টাকা মেরে খেতে হবে, কীভাবে বিভিন্ন উন্নয়নের নাম করে পকেট ভরা যাবে এটি ভালো করেই জানে। অথচ তারা ভর্তি পরীক্ষার পরে ছয় মাস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ঘরে বসিয়ে রেখেছে।’

সমাপনী বক্তব্যে ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনেক আনন্দ নিয়েই নতুন হলগুলো উদ্বোধন করলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলগুলো এখনও চালু করতে পারেনি। প্রশাসন তার নিজের স্বার্থের জন্য যেকোনও কাজে যুক্ত হতে পারে। এই প্রশাসনের মাথায় তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারে গাছ কেটে নতুন ভবন নির্মাণ এবং কীভাবে অর্থ লুটপাট করা যায় সে বুদ্ধি আসে। কিন্তু এটা আসে না কীভাবে দ্রুততম সময়ে ক্লাস শুরু করা যায়।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিব জামান এই মানববন্ধন কর্মসূচির সঞ্চালনা করেন।