জবিতে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১০

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এতে দুই গ্রুপেরই কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই জনের অবস্থা গুরুতর।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নীরব নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার সূত্রপাতে ওই দিন দুপুরে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ওই ছেলেকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হওয়া সরস্বতী পূজা শেষে সন্ধ্যায় প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ইব্রাহীম ফরাজী গ্রুপের নেতাকর্মীদের (নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগ) ওপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরপর প্রধান ফটকের সামনে দুই গ্রুপের মারামারি হয়। এ সময় সভাপতি ফরাজি গ্রুপের নেতাকর্মী কম থাকায় তার গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ব্যাচের তাসরিফ ও নিলয়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের গাজী সামসুল হুদা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল বারেকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এতে তাসরিফ মাথায় ও নিলয় হাতে রক্তাক্ত গুরুতর আহত হয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

পরে সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে সাধারণ সম্পাদক আকতারের গ্রুপের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এতে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নিয়ামত, সংগীতের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অনন্ত, কলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মিরাজ হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শেখ রিফাত আব্দুল্লাহ, ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তামিম ইকবালসহ আরও অনেকে আহত হন। এরপর সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন ঘটনাস্থলে এসে নিয়ন্ত্রণ করেন।

এ বিষয়ে আহতদের একজন নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাফসির বলেন, গতকাল আমার এক বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করা হলে আমি তার প্রতিবাদ করি। তারই জেরে আজকের এই ঘটনা।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, দুই বিভাগের শিক্ষার্থীর মধ্যে মারামারি হয়েছে। প্রশাসন একাডেমিকভাবে ব্যবস্থা নেবে। আর যদি কেউ ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে তাহলে সাংগঠনিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক ছোট বোনকে কেন্দ্র করে ছোট একটি ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ক্যাম্পাসের বাইরে, পূর্বের ঘটনার জেরে আজকে হঠাৎ ঘটনাটি ঘটেছে। যখন ঘটনাটি ঘটে তখন আমি এবং সভাপতি ফরাজী ভাই এবং প্রক্টরিয়াল বডিসহ সবাই সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করি। এটি ডিপার্টমেন্টের বিষয় তারা সমাধান করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ভিক্টোরিয়া পার্কে মারামারি হয়, তার রেশ ক্যাম্পাসে কিছুটা ছিল। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি, পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।