ঢাবিতে চলমান ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন

দেশব্যাপী অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আন্দোলন চলমান রয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ব্যানারে ধর্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।

সোমবার (১০ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য, অপরাজেয় বাংলা, কার্জন হল এলাকা, শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।

এদিন সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ, ফার্মেসি বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ, ইসলামের ইতিহাসও সংস্কৃতি বিভাগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, সমাজবিজ্ঞানসহ একাধিক বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

ঢাবিতে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন

বিক্ষোভ সমাবেশ ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের  অধ্যাপক ড. নাজমুন নাহার বলেন, আমিও একজন আসিয়া। আমারও তো নিরাপত্তা নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও নারী শিক্ষার্থীই তো নিরাপদ নয়।

তিনি বলেন, যারা ধর্ষক তাদের শুধু ফাঁসি দিলে হবে না, ফাঁসি দিলে আমরা দেখতে পারি না। যত দ্রুত সম্ভব ধর্ষকদের প্রকাশ্যে শাস্তি দিতে হবে। যেমনটা হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। ক্লাস বর্জনের ফলে পড়াশোনার গতি থেমে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি ধর্ষণ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা দ্রুত সমাধান করার আহ্বান জানান সরকারের কাছে। 

ঢাবিতে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন

অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেন, বিগত দিনগুলোতে ১৫ বছরেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হয়নি। যদি বিচার নিশ্চিত করা হতো তাহলে এখন এত এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটতো না। আমরা ধর্ষকদের ফাঁসি চাচ্ছি এবং উন্মুক্ত স্থানে ফাঁসি চাচ্ছি। আশা রাখছি পরিবর্তিত পরিস্থিতি অন্তর্বর্তী সরকার ধর্ষকদের বিচার করবে।

ঢাবির ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব মাহমুদ বলেন, আমরা ধর্ষকদের কোনও বিচার হতে দেখছি না। আমরা ধর্ষকদের এমন বিচার চাই, যার ফলে কেউ ধর্ষণের কথা চিন্তাও না করে। আমার বাড়ির মা বোন একটা বাইরে গিয়েও নিরাপদ থাকবে এমন নিশ্চয়তা আমরা চাই।

ঢাবিতে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন

সমাবেশে ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, আসিয়া আসিয়া’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে জবাই কর’, ‘রশি লাগলে রশি নে, ধর্ষকের ফাঁসি দে’, ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘২৪-এর বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাই নাই’, ‘জাহাঙ্গীর করে কি? খায় দায় ঘুমায় নাকি?’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।