১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ক্ষমতায় আসেন জিয়াউর রহমান। তিনি ১৯৭৮ সালে গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামীকে দেশে ফিরে আসার অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে আবার বৈধভাবে দেশে রাজনীতি শুরু হয় দলটির।
পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউর রহমান। সামরিক ফরমান জারির মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ৬৩টি ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে দেন। এর মাধ্যমে মৃত্যদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২০, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৬২ যুদ্ধাপরাধীসহ মোট ৭৫২ সাজাপ্রাপ্ত রাজাকারকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপরই শুরু হয় এ দেশে রাজাকার পুনর্বাসন কার্যক্রম।
কিভাবে হলেন নিজামী মন্ত্রী। ১৯৭৫ এর পর সামরিক সরকারের বৈধতার সুযোগে মতিউর রহমান নিজামী প্রথমে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত জামায়াতের ঢাকা মহানগরীর আমির ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৮৩ সালে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং ১৯৮৮ সালে সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পান।
আরও পড়ুন: চূড়ান্ত বিচারে নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল
‘জামায়াতের গুরু’ গোলাম আযম আমিরের পদ থেকে অবসরে গেলে ২০০০ সাল থেকে নিজামীর নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় জামায়াতে ইসলামী। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চারবার জামায়াতে ইসলামীর হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজামী দুবার নির্বাচিত হন তার নির্বাচনি এলাকা পাবনা-১ আসন থেকে। ১৯৯১ সালের পর ২০০১ সালে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি জয়ী হন এবং তখনকার সরকার তাকে প্রথমে কৃষিমন্ত্রী (২০০১-২০০৩) ও পরে শিল্পমন্ত্রীর (২০০৩-২০০৬) দায়িত্ব দেয়।
জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের পাকিস্তান প্রধান হিসেবে থাকা নিজামী ১৯৬১ সালে তখনকার জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘে যুক্ত হন। এরপর ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত পরপর তিনবার পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর ২২ এপ্রিল গঠিত হয় আল-বদর বাহিনী এবং এই বাহিনীর সারা পাকিস্তান প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান নিজামী।
আরও পড়ুন: নিজামীর বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
/এমএনএইচ/