নারায়ণগঞ্জে শিক্ষক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আগামী তিনদিনের ভেতর পুলিশ সুপারকে প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বন্দর থানার ওসি এবং ইউএনও সহ বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত।
এর আগে শিক্ষক লাঞ্ছনার ওই ঘটনায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম কে রহমান ও মহসীন রশিদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
উল্লেখ্য গত শুক্রবার (১৩ মে) দুপুরে বন্দর উপজেলার কল্যান্দি এলাকায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে গণধোলাই এবং পরে এমপি সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে কানে ধরে উঠবস করানো হয়। এ নিয়ে পরে সারা দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
আরও পড়ুন:
জানা যায়, গত ৮ মে স্কুলের দশম শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র রিফাত হোসেন ক্লাসে দুষ্টুমি করায় তাকে মারধর করেন প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত। শুক্রবার সকালে উন্নয়ন নিয়ে স্কুল কমিটির ডাকা সভায় রিফাতের অভিযোগ নিয়ে আলোচনায় উঠে। ওই সময়ে হঠাৎ করে এলাকায় একটি গ্রুপ ছড়িয়ে দেয় যে প্রধান শিক্ষক ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন। মসজিদের মাইকেও বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়া হলে আশেপাশের লোকজন এসে স্কুল ঘিরে ফেলে ও শ্যামল কান্তি ভক্তকে গণপিটুনি দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশ ও স্থানীয় রাজনীতিকসহ জনপ্রতিনিধিরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে বিকেল ৪টায় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান উপস্থিত হলে তার সামনেই শত শত লোকজন বিক্ষোভ করতে থাকে। তখন এমপির উপস্থিতিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত নিজের অপরাধ স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে কান ধরে উঠবস করেন।
আরও পড়ুন:
ইউআই/এফএস