শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত এক যৌথসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে আগামী ১১ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৪ দল আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সংশ্লিষ্ট জেলার আওয়ামী লীগ দলীয় জাতীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে এই যৌথসভায় অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এখনো দেশের শান্তি চান না। চান দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ক্ষমতায় যেতে। নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে। কিন্তু দেশের মানুষ এটা হতে দেবে না। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ঐক্যবদ্ধ আছে, ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
আগামী ১১ জুলাই সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ১৪ দলের মুখপাত্র নাসিম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এবং সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যাচ্ছে। আসলে এদের আগে-পিছে কারা রয়েছে?
গুলশানের সন্ত্রাসী হামলা এবং ঈদের জামাতের আগে কিশোরগঞ্জের শোকালিয়া সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশিদের কাপুরুষের মতো হত্যা করা, ঈদের দিন নামাজের আগে মুসলমান হয়ে মুসলমানদের ওপর যারা হামলা করে এরা কোন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে? যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে তারা কোন ইসলামে বিশ্বাস করে? এরা কোন ইসলামের স্বার্থে কাজ করে?
নাসিম বলেন, এই পাপিষ্ঠরা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে না। এরা অশুভ শক্তি, এরা দানবীয় শক্তি, এরা মানবতার শত্রু। এদেরকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত না করা পর্যন্ত আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই কমিটিতে স্থান দিতে হবে। জনগণের শক্তিকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। তাই আপনারা সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই কমিটি করবেন। আগামী ১২ জুলাই থেকে ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারাদেশে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভায় এই সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন তিনি।
‘নির্বাচন দিলেই এসব সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ হয়ে যাবে’ খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া যেকোনও মূল্যে ক্ষমতায় যেতে চান। তার বক্তব্যে সেটিই প্রমাণিত হয়েছে। এজন্যই তার উৎসাহে, প্রেসক্রিপশনে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলছে দেশে- তার বক্তব্যে সেটিই প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে সারাবিশ্বে যখন আলোচনা হচ্ছে। সেখানে খালেদা জিয়া কিভাবে বলেন নির্বাচন দিলেই এসব বন্ধ হবে? এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনও সম্পর্ক নেই। খালেদার বক্তব্য অনুযায়ী তাদের সঙ্গেই সন্ত্রাসীদের সম্পর্ক প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচন দিলেই এসব সমাধান হবে? এ ধরনের উস্কানির মাধ্যমে খালেদা দেশের মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) ফারুক খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক মোজাম্মেল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ, সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
/ইএইচএস /এএইচ /