সারাদেশে একই খুতবার আহ্বান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের, সমালোচনা আলেমদের

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশদীর্ঘদিন ধরেই আলেমদের আলোচনার কেন্দ্র ছিল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জুমার ‘খুতবা নিয়ন্ত্রণের’ উদ্যোগ। সব ধরনের সমালোচনা উপেক্ষা করে শুক্রবার দেশের সব মসজিদে জুমার নামাজে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) প্রদত্ত খুতবা পাঠের আহ্বান জানানো হয়েছে। এজন্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমসহ সারাদেশের সব মসজিদে দুই পৃষ্ঠার একই খুতবা পাঠিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এদিকে, দেশের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতা ও আলেমরা সমালোচনা করছেন এই উদ্যোগের। এমনকি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠানো খুতবায় আরবি লেখায় ব্যাকরণগত ভুল রযেছে বলেও জানিয়েছেন একাধিক আলেম।
জানা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে জঙ্গিবাদ রোধে সরকারের নির্দেশনার অংশ হিসেবেই শুক্রবারের জুমার নামাজের আগে খুতবা নিয়ে কী পাঠ করা হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ইতোমধ্যে সারাদেশে সব বিভাগীয় সম্মেলনের মাধ্যমে খতিবদের কাছে এ ধরনের নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল বলেন, বায়তুল মুকাররম মসজিদে যে খুতবা পাঠ করা হবে, সেটাই সারাদেশের সব মসজিদে পাঠানো হয়েছে। মসজিদের ইমামরা এই খুতবা হুবহু পাঠ করতে পারেন অথবা এটার অনুকরণে খুতবা পাঠ করতে পারেন। ইতোমধ্যে সারাদেশের মসজিদগুলোয় খোতবার কপি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 এ প্রসঙ্গে ইসলামিক ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, আমি মনে করি এই সব বিষয় দেশের সব আলেম, ইমাম, খতিব ভালোভাবে অবগত। এমনিতেই আলেমরা সচেতনভাবে এ বিষয়ে ভূমিকা রাখছেন। তারপরও আমরা ইতোমধ্যে সারাদেশের ইমাম খতিবরা সন্ত্রাস নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কুরআন হাদীসের আলোকে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আলোচনা করার আহ্‌বান জানিয়েছি।  ইসলামিক ফাউন্ডেশন যাদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে তাদের প্রতি দেশের মুমিন মুসলমান ও আলেম উলামাদের আস্থা নেই। ফলে তাদের দিক নির্দেশনায় আলেম উলামারা বিব্রতবোধ করতে পারেন। তারা যেটি পাঠিয়েছে তাতে ব্যকরণগত ভুল রয়েছে, যা অনিভিপ্রেত।

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, শুধু জুমার খুতবা আর মসজিদ নজরদারি-নিয়ন্ত্রণ নয়, হামলাকারীরা ইসলামকে কলঙ্কিত করে বাংলাদেশে আজান, নামাজ, মসজিদ, মাদ্রাসা বন্ধ করার জন্যেই সুপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। সাড়ে চৌদ্দশত বছর যাবত চলে আসা জুমার খুতবা নিয়ন্ত্রণের কোনও চক্রান্ত জনগণ মেনে নেবে না। জুমার খুতবা-বয়ানে এদেশের মানুষ হেদায়েতের পথ পাচ্ছে। খুতবা-বয়ান, ওয়াজ-নসিহত না থাকলে এদেশ একটি বর্বর জাতিতে পরিণত হতো। জুমার খুতবা নিয়ন্ত্রণ করা হলে জঙ্গি ও ষড়যন্ত্রকারীরাই উৎসাহিত হবে।

মাওলানা তাসনিম বলেন, জুমার নামাজে ইসলামিক ফাউন্ডেশন  যে খুতবা পাঠ করতে বলেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ভালো কিছু পাঠ করা হয়। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সব সময় কথা বলা হয়। এছাড়া, ইসলামিক ফাইন্ডেশন যে খুতবা পাঠিয়েছে সেটিতে ব্যকরণগত ভুলও রয়েছে।

 আরও পড়তে পারেন: খুতবা ‘নিয়ন্ত্রণের’ উদ্যোগ নিচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন

 /এমএনএইচ/