বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর ১৩ ধারা’র ২ উপধারায় এ বলা হয়েছে, কোনও শহর বা স্থানে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ক্যাম্পাস সীমিত রাখতে হবে এবং অন্য কোনও স্থানে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কার্যক্রম পরিচালিত বা কোনও ক্যাম্পাস বা শাখা স্থাপন করা ও পারিচালনা করা যাবে না।
ইউজিসি’র উপ-পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) জেসমিন পারভীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে আইন অমান্য করে ৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছিল। সেই আদালের এক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতেই ৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ টি আউটার ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ইউজিসি বলছে, বেগম গুলচেমনারা ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি (বিজিসি), আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, নর্দান ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং (ইউএসটিসি), ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স (ইউআইটিএস), সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ১৭টি ক্যাম্পাস রয়েছে।
এদিকে ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, এদের মধ্যে বেগম গুলচেমনারা ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির (বিজিসি) চট্টগ্রামের চন্দনাইশে মূল ক্যাম্পাসের বাইরে চট্টগ্রামের ওআর নিজাম রোডে একটি আউটার ক্যাম্পাস রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড অব ট্রাস্টির সভাপতি আফসার উদ্দিন আদালতে রিট করে দীর্ঘদিন এ অবৈধ ক্যাম্পাস চালিয়ে আসছিলেন।
ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং (ইউএসটিসি) বিশ্ববিদ্যালয়টির দুটি শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে চট্টগ্রামে।
আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি সরকারের নির্দেশে বন্ধ হলেও আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে জোরেশোরেই অবৈধ ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। কমিশনের হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির সারাদেশে অবৈধ ক্যাম্পাস রয়েছে ৭টি। এর বাইরেও আরও শাখা থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন ইউজিসি কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত ক্যাম্পাসের বাইরে চট্টগ্রামেই আরও ৫টি অবৈধ শাখা রয়েছে।
নর্দান ইউনিভার্সিটির ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনায় অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনা করে আসছিল। পরে গত বছর রাজশাহী’র শাখা ক্যম্পাস বন্ধ করে ইউজিসি। তবে খুলনার ক্যাম্পাসটিতে বিশেষ বিবেচনায় শুধু বিদ্যমান শিক্ষার্থীদের কোর্স সম্পন্ন করার অনুমতি দেওয়া হয়। নতুন শিক্ষার্থী ভর্তিও বন্ধ ছিল।
ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স (ইউআইটিএস) রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি অবৈধ ক্যাম্পাস চালাচ্ছে। এখানেও শুধু বিদ্যমান শিক্ষার্থীদের কোর্স সম্পন্ন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ আছে।
সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি’র দেশের বিভিন্ন জায়গায় শাখা ক্যাম্পাস ছিল ৭টি। তার মধ্যে গত বছর ৫টি আউটার বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১২৯টি শাখা ক্যাম্পাস ছিল। তার মধ্যে গত বছর আদালতের স্থগিতাদেশ পাওয়া ২৯টি ক্যাম্পাস ছাড়া সব অবৈধ ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কার্যক্রমই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দারুল ইহসান বন্ধ করার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কি ঝুঁকিতে পড়ে গেলো কি না জানতে চাইলে ই্উজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেন কোনও সমস্যায় পড়তে না হয় সে ব্যাপারে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন-
কল্যাণপুরে সফল অভিযান দেশ ও জনগণকে বিরাট ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে: প্রধানমন্ত্রী
গুলশানের মতো বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের: আইজিপি
মানিকগঞ্জ ও পাবনায় যমুনার দুর্গম চরে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলছে
/এফএস/