যমুনা গ্রুপের বকেয়া টাকায় ৮ ধরনের উন্নয়ন সম্ভব: এনবিআর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)যমুনা গ্রুপের কাছ থেকে পাওনা রাজস্ব দিয়ে দেশে অবকাঠামো নির্মাণসহ আট ধরনের উন্নয়ন সম্ভব বলে দাবি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর।

সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এনবিআর বলেছে, যমুনা গ্রুপের কাছ থেকে ভ্যাট ও শুল্ক বাবদ বকেয়া রাজস্ব ২১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করা গেলে প্রতিটি জেলায় ১ হাজার ৬৯০টি কালভার্ট, ১০৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক, ৪৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আট ধরনের উন্নয়ন সম্ভব।

এছাড়া যমুনা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যারোমেটিক কসমেটিকস লিমিটেডের বিরুদ্ধে সুদসহ প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বকেয়া রাজস্ব আদায় করা গেলে উল্লিখিত উন্নয়ন কাজগুলোর তিনগুণ বেশি করা সম্ভব হবে বলেও দাবি এনবিআরের।

মঙ্গলবার এনবিআরের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যমুনা গ্রুপের কাছে ভ্যাট ও কাস্টমস ডিউটি হিসাবে বকেয়া রাজস্ব ২১৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করা গেলে এই সংগৃহীত টাকা দিয়ে সরকারের আট ধরনের উন্নয়ন কাজগুলো করা সম্ভব। যেমন- ১ লাখ ৮ হাজারটি কালভার্ট নির্মাণ করা যাবে। সে হিসেবে প্রতিটি জেলায় অন্তত ১ হাজার ৬৯০টি কালভার্ট নির্মাণ করা সম্ভব। এছাড়া ১০৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করা যেতে পারে।

এই ২১৬ কোটি টাকা আদায় করা গেলে সারাদেশে ৪৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা যেতে পারে। সে হিসেবে প্রতি জেলায় কমপক্ষে সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা যায়। তেমনিভাবে ৪৩ হাজার ২০০টি মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির মেরামত করা যেতে পারে। সে হিসেবে প্রতি জেলায় ৬৭৫টি।

এ ছাড়া ২১৬ কোটি টাকায় ৪ কোটি ৩২ লাখ শিশুকে একবেলা (৫০ টাকার খাবার) মিড-ডে লাঞ্চ (স্কুল ফিডিং) দেওয়া যায়। ৭২ লাখ বয়স্ক লোককে এক মাসের বয়স্ক ভাতা দেওয়া সম্ভব।

যমুনা গ্রুপের কাছ থেকে ২১৬ কোটি টাকা আদায় করা গেলে ২ লাখ মুক্তিযোদ্ধাকে ১০ হাজার টাকা করে এক মাসের ভাতা দেওয়াও সম্ভব। ৪৩ হাজার ২০০ গ্রামীণ শিক্ষিত বেকার যুবক/যুব মহিলাদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থান/স্বনির্ভর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করাও সম্ভব।

যমুনা গ্রুপএনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই বকেয়া টাকা নিয়ে যমুনা গ্রুপকে একটি চিঠি দিয়ে ‘অত্যন্ত আপত্তিকর ও অশালীন’ জবাব পেয়েছে এনবিআর। চিঠিটির ভাষা ও বিষয়বস্তু অত্যন্ত আপত্তিকর ও অশালীন যা ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ বলে প্রতীয়মাণ হয়।

এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ইতোপূর্বে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ ও বক্তব্যের মাধ্যমেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভাবমূর্তি হেয় করার অপপ্রয়াস পরিলক্ষিত হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংস্থার প্রতি এহেন অপপ্রয়াস রাষ্ট্রের প্রতি অপপ্রয়াস হিসেবে বিবেচিত, যা জনগণ ও সরকার কারও কাছেই কাম্য হতে পারে না।

বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেশে একটি ব্যবসা, শিল্প ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির অব্যাহত প্রয়াস চালাচ্ছে। স্বনির্ভর ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সবার সহযোগিতায় রাজস্ব সংগ্রহে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
/জিএম/এবি/

আরও পড়ুন
মার্গারিটাও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে

শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ বিশ্বের প্রশংসা অর্জন করেছে: আইজিপি