বিলবোর্ড আর নয়, এবার শুধুই ডিজিটাল বোর্ড

রাজধানীতে আর বিলবোর্ড স্থাপনের অনুমোদন দেবে না সিটি করপোরেশন। এর পরিবর্তে স্থাপন করা হবে ডিজিটাল বোর্ড। এই বোর্ডের মাধ্যমেই বিভিন্ন পণ্যের প্রচারণা করা যাবে। অন্যদিকে প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে নতুন বিলবোর্ডের অনুমোদন স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাজধানীতে বিলবোর্ডবিলবোর্ডের অনুমোদন না দেওয়া প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিলবোর্ড স্থাপন সংক্রান্ত নীতিমালা থাকলেও কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশনের অনুমোদন নিয়ে যত্রতত্র বিলবোর্ড-ইউনিপোল স্থাপন করেন। বিশেষ করে ২০১১ সালের নভেম্বরে ঢাকা সিটি করপোরেশন দ্বিখণ্ডিত হওয়ার পর নির্বাচিত প্রতিনিধি (মেয়র ও কাউন্সিলর) না থাকায় প্রভাবশালীদের এই দৌরাত্ম্য মারাত্মক আকার ধারণ করে। তিনি আরও জানান, তখন দুই সিটি করপোরেশনের দায়িত্বে থাকা প্রশাসকরা এই প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। ফলে ‘শ্রীহীন’ হয়ে পড়ে নগরী। এমনকি দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায় কয়েকটি বিলবোর্ড।

জানা গেছে, বিলবোর্ড নিয়ে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর দুই সিটি করপোরেশন উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। কয়েক মাসের মধ্যেই অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণ করা হয়। এরপর থেকে আর নতুন কোনও বিলবোর্ড বা এ ধরণের কোনও প্রচারণামূলক বোর্ডের অনুমোদন দিচ্ছে না ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
সিটি করপোরেশন সূত্রে আরও জানা যায়, অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদের পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ডিজিটাল বোর্ড স্থাপনের পরিকল্পনা করে। এর অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন শাহবাগ মোড়ে ডিজিটাল স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এটা এখন চালুর অপেক্ষায় রয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিলবোর্ড বিষয়ক একটা নীতিমালা আমাদের আছে। তবে এখন আর কোনও বিলবোর্ডের অনুমোদন দিচ্ছি না। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর গত এক বছরে একটা বিলবোর্ডেরও অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ অনুমোদন নেওয়ার পর কেউ কেউ নীতিমালা মানেন না। এতে নগরীর সৌন্দর্যহানিসহ দুর্ঘটনারও আশঙ্কা থাকে।’
তিনি আরও জানান, ‘আমরা এবার ডিজিটাল বোর্ড স্থাপনের পরিকল্পনা করেছি। পরীক্ষামূলকভাবে শাহবাগে একটা স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। রাস্তাগুলোর মেরামত কাজ শেষ হলে নগরীর অন্যান্য এলাকায়ও এমন ডিজিটাল বোর্ড স্থাপন করা হবে।’
বাংলাদেশ বিলবোর্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী রাশেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ত্রিশ-চল্লিশ বছর ধরে আমরা সিটি করপোরেশনের অনুমোদন নিয়ে বিলবোর্ড ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু সিটি করপোরেশন আর অনুমোদন না দেওয়ায় এ ব্যবসায় ধস নেমেছে।’ ডিজিটাল বোর্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। তবে এই বোর্ড স্থাপন ও পরিচালনায় কোটি টাকার দরকার। এ কারণে এখানে বিজ্ঞাপন দিলে সেটা হবে অত্যন্ত ব্যয়বহুল।’

/ওএফ/এসএ/আপ-এমও/