৪ লাখ টাকায় ঢাবির ও আড়াই লাখ টাকায় জবির প্রশ্ন দেওয়ার প্রলোভন প্রতারক চক্রের! (অডিও)

noname

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়। এ পর্যন্ত এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সবগুলো ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে বলেও দাবি করেছে চক্রটি। চক্রের এক সদস্য ঢাবির প্রশ্ন ৪ লাখ ও জবির প্রশ্ন আড়াইলাখ টাকায় দিয়েছে বলে দাবি করেছে।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ঢাবি ও জবির ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। সকালে হয়েছে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা। বিকাল ৩টা থেকে জবিতে পরীক্ষা। এ উপলক্ষে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস চক্র সক্রিয় রয়েছে এমন অভিযোগ আসার পর ফেসবুকে পাওয়া যায় মাকসুদুল হাসান প্রিন্স নামের একটি ফেসবুক আইডি। তার ওয়ালে তিনি শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পোস্ট দিয়েছেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি ইউনিটে কে কে পরীক্ষা দেবে? ইনবক্সে একটু আওয়াজ দাও। সবই আল্লাহ পাকের ইচ্ছা।’

প্রিন্স নামে ওই ফেসবুকের ইনবক্সে মেসেজ পাঠালে তিনি দুটি ফোন নং (০১৭১০১৯০৭১৪, ০১৬৮৫৭৬৫৫৫৬) দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। মোবাইল ফোনে তার কাছ থেকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘জবির প্রশ্ন এবং উত্তর পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে ঠিক বেলা ২টার সময় ভাইবার অথবা হোয়াটস অ্যাপে পাঠাবো। উত্তরগুলো শুধু ১০ মিনিট চোখ বুলিয়ে গেলেই সবগুলো উত্তর দেওয়া সম্ভব।’

ফেসবুকে কথোপকথন

কত টাকা লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সাধারণত আড়াই লাখ টাকা নেই। কিন্তু এখন কমিয়ে মাত্র ৫০ হাজারে দিচ্ছি। প্রশ্ন নেওয়ার আগে ৩০ হাজার দেবেন।’

প্রশ্নপত্র শতভাগ কমন পড়বে নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ হলে আপানার কাছ থেকে প্রবেশপত্র নিয়ে নেওয়া হবে। রেজাল্ট দিলে আপনি আবার প্রবেশপত্র পেয়ে যাবেন। তখন বাকি ২০ হাজার দিতে হবে।’

সরাসরি টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাকা বিকাশে পাঠাবেন। তবে পরীক্ষার পর প্রবেশপত্র নিতে গেলে আমাদের সিন্ডিকেটের একজনের সঙ্গে আপনার তো দেখা হবেই। তবে সেখানে কোনও কথা হবে না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নও তারা দেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা আজ ঢাবির প্রশ্নও দিয়েছি। তবে ওটার টাকার অংশ একটু বেশি ৪ লাখ টাকা।’ এর আগে ঢাবির ‘গ’ ইউনিটের প্রশ্নও ফাঁস করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। তাদের সিন্ডিকেট এতই স্ট্রং যে ঢাবির প্রশ্ন পরীক্ষার একদিন আগেই বের করে দিতে পারেন। কথা বলার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমার ফোন নম্বরটি অন্য নম্বর থেকে ডাইভার্ট করা।’

qes fash no

ফোনে ওই চক্রের সদস্যের সঙ্গে কথা বলার কিছুক্ষণ পরেই ফেসবুকে দেওয়া তার পোস্টটি ডিলিট করে দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রবিউল ইসলামকে এ বিষয়টি জানালে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন যারা করেছে এমন অন্তত ৭ জনকে আমার আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ফেসবুকে যারা প্রশ্ন দিচ্ছে বলে পোস্ট করছে তাদের ব্যাপারেও আমার সক্রিয় রয়েছি।’বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদকের কাছে ওই পোস্ট এবং নম্বরের স্ক্রিনশট চেয়ে সহযোগিতা করতে বলেন তিনি।

আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূর মোহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা চারিদিকে নজর রেখেছি। আমাদের টিম কাজ করছে এমন চক্রকে ধরতে।’ তবে যারা ফেসবুকে অথবা কোনও মাধ্যমে প্রশ্ন দিচ্ছি বলে ছড়াচ্ছে তারা ‘ভুয়া’ প্রশ্ন দিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

 

  /আরএআর/এসটি/এফএস/