ওবায়দুলের বিরুদ্ধে রিশা হত্যা মামলার চার্জশিট

রিশা ও ওবায়দুলরাজধানীর কাকরাইলে ছুরিকাঘাতে নিহত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা (১৫) হত্যা মামলার প্রধান আসামি ওবায়দুল খানকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন।

সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে এ অভিযোগপত্র তিনি দাখিল করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম সত্য ব্রত শিকদার এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘চার্জশিটে এ মামলায় ২৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ আসামির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা মোতাবেক চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এ মামলার পরর্বতী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৭ নভেম্বর।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে বখাটে ওবায়দুলের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। তার বাবা মো. রমজান আলী একজন কেবল ব্যবসায়ী। রাজধানীর বংশালে তারা সপরিবারে বসবাস করেন।

ঘটনার পরদিন ২৫ আগস্ট এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ধারায় এবং পেনাল কোডে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করে ওবায়দুল খানকে (২৯) আসামি করা হয়। আসামি ওবায়দুল ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ছিল।

মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৬ মাস আগে মায়ের সঙ্গে ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সে যায় রিশা। সেখানে একটি ড্রেস সেলাই করতে দেয় সে। পরে দোকানের রিসিট থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ওবায়দুল খান রিশাকে ফোনে উত্ত্যক্ত করতো। পরে ফোন নম্বরটি বন্ধ করে দেওয়া হলে ওবায়দুল স্কুলে যাওয়ার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় রিশাকে ছুরিকাঘাত করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। পরে ওই টেইলার্সে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওবায়েদুল দুই মাস আগে চাকরি ছেড়ে সেখান থেকে চলে গেছে।
গত ৩১ আগস্ট সকালে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সোনারায় বাজার থেকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ওবায়দুলকে গ্রেফতার করে ঢাকায় আনে পুলিশ। ওবায়দুলের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মিরাটঙ্গী গ্রামে। পরের দিন তাঁর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ডের প্রথম দিন ওবায়দুল খান রিশাকে ছুরিকাঘাতের কথা স্বীকার করেন।
/এসআইটি/এসএনএইচ/