ফারুক খানের সভাপতিত্বে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে কমিটির সদস্য মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, মো. আলী আশরাফ এবং তানভীর ইমাম বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক সংসদ সদস্য বলেন, ‘বৈঠকে এ ঘটনায় সবাই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে একের পর এক বিপত্তি মন্ত্রণালয়ের সঠিক পর্যবেক্ষণ থাকলে হতো না।’
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, “সংসদীয় কমিটি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার সময়ে রানওয়েতে সমস্যা হয়েছিল। বৈঠকে আমরা জানতে চেয়েছিলাম সেই ঘটনার যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? তারা (মন্ত্রণালয়) জানায়, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি যে ধরনের ‘ইরেসপনসিবল বিহেবিয়ার’ করা হয়েছে তাতে আরও শাস্তি দেওয়া উচিত ছিলো।”
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে সৌদি আরব থেকে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটটি শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণের আগ মুহূর্তে রানওয়েতে কিছু দেখতে পেয়ে অবতরণ না করে ফের আাকাশে উড্ডয়ন করে। রানওয়ে পরিস্কার করার পর প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজটি অবতরণ করতে প্রায় ২০ মিনিট দেরি হয়।
এদিকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ‘অসন্তোষ’ এর কথা স্বীকার করেছেন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আমাকে দায়ী করে কথা বলেছেন, এতে লজ্জার কিছু নেই।’
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের ত্রুটি সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার জন্য উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িং এবং এয়ারক্রাফট ইঞ্জিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেকট্রিকের (জিই) কাছ থেকে তথ্য নিতে মন্ত্রণালয়ের প্রতি সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ত্রুটির বিষয়ে বোয়িং এবং জিই’র সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’
ফারুক খান বলেন, ‘এই উড়োজাহাজগুলো অত্যাধুনিক। এর যে ফ্লাইট রেকর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ যেমন রিপোর্ট পাচ্ছে একইভাবে জিই ও বোয়িংয়ের কাছেও যাচ্ছে। আমরা বলেছি তাদের কাছ থেকে ডাটা কালেক্ট করো। এর পরে সম্পূর্ণ ডাটা বিশ্লেষণ করো বের করা হবে এ ঘটনা কেন, কিভাবে হয়েছিলো। বিশেষভাবে কেউ দায়ী কিনা। মন্ত্রণালয়, বিমান, ও বেবিচকের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর প্রয়োজন হলে সংসদীয় কমিটিও তদন্ত করবে।’
এর আগে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পরা এবং জরুরি অবতরণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট সংসদীয় কমিটিকে অবহিত করার এবং রিপোর্ট অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের সুপারিশ করা হয়। ভবিষ্যতে মন্ত্রণালয়কে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের পরামর্শ প্রদান করা হয়। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা বিমান কেনার জন্যও প্রস্তাব করা হয়েছে।
- রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা বিমান কেনা হবে: মেনন
- প্রধানমন্ত্রীর বিমানে ত্রুটি: দায়ীদের শাস্তির সুপারিশ সংসদীয় কমিটির
/সিএ/এমও/