শনিবার সকালে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন নামে হকারদের একটি সংগঠন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। মেয়রের ঘোষণা প্রত্যাহার করা না হলে রবিবার নগরভবন ঘেরাওয়ের হুমকিও দিয়েছে সংগঠনটি। তবে হকারদের অন্য সংগঠন বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশন মেয়রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা আপোষের মাধ্যমে আবারও ফুটপাথে বসতে চাইছে।
মেয়রের ঘোষণার পক্ষে-বিপক্ষে হকারদের অবস্থানের কারণে রবিবার রাজধানীতে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, মেয়রের ঘোষণা বহাল আছে এবং তা বাস্তবায়নে তারা প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘দিনের বেলায় রাস্তা ও ফুটপাথে হকার বসলে আমাদের মোবাইল কোর্ট সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে।’
রাজধানীর গুলিস্তান, পুরানা পল্টন, বায়তুল মোকাররম, জিপিও, স্টেডিয়াম, মতিঝিল, দিলকুশা এলাকার অনেক ফুটপাথ ও রাস্তা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হকারদের দখলে থাকে। এ কারণে পথচারীদের চলাচলে যেমন সমস্যা হয়, তেমনি যানবাহনও স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। অসংখ্যবার উচ্ছেদ করা হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই হকাররা আবারও ফুটপাথ ও রাস্তা দখল করে নেন। তাই এসব এলাকা পুরোনো চেহারায় ফিরে আসতে সময় লাগে না।
সমস্যার সমাধানে গত ১১ জানুয়ারি নগরভবনে হকার নেতা, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যৌথসভা করেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন। সভায় হকারদের ফুটপাথ-রাস্তা দখলের নেপথ্যে প্রশাসনের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা ও লাইনম্যান নামধারী চাঁদাবাজদের দায়ী করা হয়।
সেদিনের সভায় মেয়র সাঈদ ঘোষণা দেন, রবিবার থেকে কর্মদিবসের সকাল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত গুলিস্তান-মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকায় ফুটপাথ ও রাস্তায় কোনও হকার বসতে পারবে না।
তবে অন্য সংগঠন বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি এমএ কাশেম মেয়রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে রাজি নন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মেয়র সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দিনের বেলায় নিষিদ্ধ হলেও সন্ধ্যার পর হকাররা ফুটপাতে বসতে পারবেন। বুধবার নগরভবনে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় আমরা উপস্থিত ছিলাম। আমরা মেয়রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে হকাররা যাতে সুশৃঙ্খলভাবে দিনের বেলায়ও ফুটপাতে বসতে পারেন, সে বিষয়ে মেয়রকে রাজি করাতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অভিযোগ আছে, লাইনম্যান নামধারী বেশ কয়েকজন চাঁদাবাজ ফুটপাথ দখলে রাখতে সাধারণ হকারদের উস্কানি দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে এমএ কাশেম বলেন, ‘আমরা শুধু ফুটপাথে বসতে চাই। কিন্তু লাইনম্যানরা সেটা না মেনে প্রধান সড়কের ওপর হকার বসিয়ে দেয়। মেয়রের সিদ্ধান্তে তাদের বিশাল আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এ কারণে তারা সাধারণ হকারদের ব্যবহার করে মেয়রের ঘোষণা বানচালের চেষ্টা করছে।’
প্রসঙ্গত, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, গুলিস্তান-মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকায় ২ হাজার ৫০৪ জন হকার রয়েছেন।
/এএআর/আপ-টিআর/