দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করতে ছাত্রলীগ নেতাদের কাজ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের কোনও স্থান বাংলাদেশে নেই। এই পথে যারা যাবে তাদের কঠোর শাস্তি দিবো বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করতে ছাত্রলীগ নেতাদের কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্ররা তরুণ, তারাই আগামী দিনের ভবিষ্যত, আগামী দিনে দেশ গড়বে।  জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এগুলো একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়।’

জঙ্গিবাদ কেবল বাংলাদেশের সমস্যা নয় সারা বিশ্বের সমস্যা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবাক হতে হয় যখন ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্ররা জঙ্গিবাদে জড়ায়। তারা কিসের আশায় যায়? যারা গিয়েছিল তারা কী খবর পাঠিয়েছে যে তারা বেহেশতে গেছে?’

দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করতে ছাত্রলীগকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাদের নিজ নিজ গ্রামের নিরক্ষর মানুষদের অক্ষর জ্ঞান দিতে হবে। যাতে বাংলাদেশকে দ্রুত নিরক্ষরমুক্ত করতে পারি।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। ছাত্রলীগের স্লোগান হলো শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি। দেশকে প্রগতির পথে নিয়ে যেতে চাই, দেশকে আলোর পথে নিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা আমরা শুরু করেছি, তা যেন থেমে না যায়। ছাত্রলীগকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আগামী দিনে তোমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে।  আদর্শ, নীতি ও ব্রত নিয়ে দেশ গড়ার জন্য তোমাদেরকে তৈরি হতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগকে আরও সুগঠিত করে তুলতে হবে।  ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের এক বছর আগের সংগঠন। ছাত্রলীগের ঐতিহ্য আছে, প্রতিটি অর্জনের সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরকে দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করতে হবে।’

ছাত্রদের সবচেয়ে বড় শপথ হবে শিক্ষা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষা দারিদ্র্য থেকে মুক্তির অন্যতম হাতিয়ার। ছাত্র রাজনীতি করবো, পাশাপাশি শিক্ষা গ্রহণই হলো সবচেয়ে বড় কাজ। শিক্ষা গ্রহণ করলে কেউ তা হাইজ্যাক বা চুরি করে তা কেউ নিতে পারবে না। শিক্ষাই হবে জীবন চলার পথে পাথেয়। তাহলে দেশকে, দেশের মানুষকে কিছু দিতে পারবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষা হবে সবচেয়ে বড় সম্পদ। অশিক্ষিতদের হাতে ক্ষমতা গেলে কী হয় তা আমরা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি ৭৫ এর পর থেকে। যারা এসেছে তারা দেশকে শুধু পেছনে নিয়ে গেছে। ছাত্রলীগের প্রত্যেককে বলবো বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়া উচিৎ। সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। একটা আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করলে দেশের মানুষকে কিছু দেওয়া যায়।’

এর আগে, বক্তব্য রাখার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতাদেরকে বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগের নেতা নই, কর্মী ছিলাম, এখনো কর্মীই আছি।’ ছাত্রলীগ নেতারা তাদের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে ছাত্রলীগের নেতা উল্লেখ করায় প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ সভাপতিত্ব করেন। এখানে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

/পিএইচসি/এমও/টিএন/