নাম বাছাইয়ে যে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে সার্চ কমিটি

সার্চ কমিটিরাজনৈতিক দলের প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করছে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি। দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষতার প্রমাণ কতোটা দেখিয়েছেন তারা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন কিনা, অতীতে কোনও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিনা, স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন কিনা এসব বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ে কাজ চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবিত নামগুলো থেকে ২০ জনের তালিকা তৈরি করেছে সার্চ কমিটি। তাদের ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ খোঁজ নিতে সংক্ষিপ্ত তালিকা রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করে এ দায়িত্ব পালন করতে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাকে অবহিত করেছে সার্চ কমিটি।
রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবিত নাম নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে বলে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া। চার বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে সার্চ কমিটির বৈঠকের পর তিনি ইঙ্গিত দেন, রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবিত ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে যে নাম যাবেই, এমনটা না-ও হতে পারে। সেখানে সংযোজন-বিয়োজনও হতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের মন্তব্যে স্পষ্ট, তালিকার বাইরেও কিছু ব্যক্তির ব্যাপারে সার্চ কমিটি খোঁজ-খবর নেওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এমনটাই নিশ্চিত করেছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে যোগ্য ব্যক্তিদের বাছাই করতে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত সার্চ কমিটির ওপর ধীরে ধীরে প্রত্যাশার চাপ বাড়তে শুরু করেছে। কমিটির সদস্যরাও তা টের পাচ্ছেন। এজন্য সার্চ কমিটি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নাম বাছাইয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে কোনও রকম ছাড় দিতে রাজি নন সদস্যরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সার্চ কমিটির অন্তত তিনজন সদস্য বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি, রাষ্ট্রপতির নিযুক্ত সার্চ কমিটির ওপর দেশের মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা উপযুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে পারবো বলে আশা করছি। তারা নিশ্চয়ই দলমত নির্বিশেষে সব স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে রাষ্ট্রের মঙ্গল হয় এমন দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবেন। আমরা একটি ভালো নির্বাচন কমিশন গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে চাই।’

অবশ্য প্রকাশ্যে সার্চ কমিটির কেউ কোনও কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না। তাদের ভাষ্য, কথা বলা বারণ। তাদের হয়ে সব বিষয়ে কথা বলবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি শিরীণ আখতার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আপাতত দশ কার্যদিবসের আগে আমরা কোনও কথা বলবো না। কথা বলতে মানা আছে আমাদের। কথা বলবো, দশ কার্যদিবসের পরে।’ একই কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। ফোন করে কোনও প্রশ্ন করার আগেই তিনি বলেন, ‘এখন কোনও কথা বলবো না।’

এদিকে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বড় দুটি রাজনৈতিক দল সার্চ কমিটি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা বক্তব্য প্রদান করলেও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এখনও প্রত্যাশা করছে সার্চ কমিটি যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিদের নাম বাছাই করতে পারবে। রাষ্ট্রপতির বাছাইকৃত নামের মধ্যে থেকেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিশিষ্টজনেরা।

আরও পড়ুন: অথচ মুস্তাফিজকে ভেবেই বেছে নেওয়া হয়েছিল হায়দরাবাদ
/জেএইচ/এএআর/আপ-এআর/