জবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ

বহিষ্কৃত সম্রাট (গোল চিহ্নিত)জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বোটানিক্যাল গার্ডেনে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের আউটডোর পরীক্ষা চলছিল মঙ্গলবার। এসময় পরীক্ষারত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৫ জন শিক্ষার্থী।

এ ঘটনার পর এক বৈঠকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী সম্রাটকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পরীক্ষা চলার সময় সম্রাট জবির বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে বাধা দেন এক পরীক্ষার্থী। এসময় দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সম্রাট লাঠিসোটা সহ ছাত্রলীগের ৭-৮ জন কর্মীকে নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় ছাত্রীদেরও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। 

আহত শিক্ষার্থী জয় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সকাল ৯টায় আমাদের আউটডোর পরীক্ষা শুরু হয়। বেলা ১২টার দিকে সম্রাট বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রবেশ করতে চাইলে আমি তাকে বলি, এখানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। জবি বোটানি আর চারুকলা বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গার্ডেনে বিনা অনুমতিতে অন্য কোনও বিভাগের বা বহিরাগত কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। আমি সম্রাটকে প্রবেশ করতে নিষেধ করলে সে তার কয়েক জন বন্ধু নিয়ে আমদের ওপর হামলা চালায়। এতে ছাত্রী সহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।এক শিক্ষার্থীর হাতে আঘাতের চিহ্ন

এ বিষয়ে চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বজলুর রশিদ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা বোটানিক্যাল গার্ডেনে আউটডোর পরীক্ষা দেওয়ার সময় ছাত্রলীগের কিছু কর্মী তাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা জবি প্রশাসনকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দিয়েছি, ভিসি স্যারকে জানিয়েছি। আমরা এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি। 

ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, সম্রাট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সিরাজুল ইসলামের ঘনিষ্ঠজন ও একনিষ্ঠ কর্মী। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি সহ বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জবি শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বলেন, সম্রাটের কারণে জবি ছাত্রলীগের আগেও কয়েকবার সম্মানহানি হয়েছে। অনেক অভিযোগ থাকলেও জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তার (সম্রাট) বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অনেক চেষ্টা করেও সম্রাটের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম অবশ্য সম্রাটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সম্রাট ছাত্রলীগের কেউ না, আমি তাকে চিনি না। কোনও এক সম্রাট চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, আর চারুকলা বিভাগ লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে। আমরাও তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। 

এএআর/