গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ও ব্যাংকের পাশাপাশি অ-ব্যাংক পরিশোধ সেবাদানকারীদের আইনের কাঠামোয় আনতে ‘পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বিল–২০২৪’ জাতীয় সংসদে তোলা হয়েছে। সোমবার (৬ মে) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর পক্ষে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বিলটি সংসদে তোলেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে বলা হয়েছে, কোনও ব্যাংক বা কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনও পরিশোধ ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ, পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা ইলেকট্রনিক মুদ্রায় পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। একইভাবে কোনও ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া কোনও পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। এই বিধান লঙ্ঘনের সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড।
বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি অগ্রিম পরিশোধ দলিল ইস্যু বা ক্রয়–বিক্রয় করতে পারবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জনসাধারণ থেকে যেকোনও প্রকার বিনিয়োগ গ্রহণ, ঋণ প্রদান, অর্থ সংরক্ষণ বা আর্থিক লেনদেন উদ্ভব হয় এরূপ কোনও অনলাইন বা অফলাইন প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করতে পারবে না। এসব বিধান অমান্য করলে সাজা হবে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড। এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য, অজামিনযোগ্য এবং অ-আপসযোগ্য হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিদ্যমান কোনও আইন নেই। বর্তমান বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২ অনুযায়ী, বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলম্যান্ট সিস্টেমস রেগুলেশনস–২০১৪ এবং রেগুলেশন্স অন ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার–২০১৪ এর আওতায় সব পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। এই সংক্রান্ত পৃথক কোনও আইন না থাকায় ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ইলেকট্রনিক লেনদেন ব্যবস্থায় অংশ নিতে এবং বর্ণিত রেগুলেশন্স পরিপালন করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে।
এছাড়া অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিশোধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণেও বর্তমানে কোনও আইন নেই। ফলে গ্রাহক-স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ব্যাংকের পাশাপাশি অ-ব্যাংক পরিশোধ সেবাদানকারীদের আইনি কাঠামোর আওতায় নিয়ে জরুরি বিধায় ‘পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন, ২০২৪’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।