জনভোগান্তির দায় নির্ধারণের দায়িত্ব জনগণের?

পরিবহন ধর্মঘট চলাকালে রাজধানী ঢাকার চিত্রআকস্মিকভাবে কর্মবিরতির নামে ধর্মঘট করে জনগণের ভোগান্তি বাড়ানোর দায়িত্ব নিতে চাইছেন না পরিবহন সেক্টরের কোনও নেতা।ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর এর দায় একপক্ষ আরেকপক্ষের ঘাড়ে চাপাতে চাইছেন। এমনকি এই সেক্টরের সবচাইতে আলোচিত নেতা নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানও দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন।

শাজাহান খান বলেছেন, সহকর্মীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ফাঁসির আদেশ হওয়ায় পরিবহন শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মবিরতি পালন করেন। এ কারণে মানুষের যে ভোগান্তি হয়েছে, তার জন্য আমরা দুঃখিত। তবে এর দায়-দায়িত্ব নির্ধারণের ভার জনগণের ওপরই ছেড়ে দিলাম।

পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার বিষয়ে বুধবার বেলা সোয়া দুইটায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় মতিঝিলের পরিবহন ভবনের ছয়তলায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির কার্যালয়ে। এ সময় শাজাহান খান একথা বলেন।

এর আগে একই কার্যালয়ে এ প্রতিবেদকের কথা হয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এটা ধর্মঘট না, শ্রমিকদের কর্মবিরতি। আশাকরি, আজই এর অবসান হবে।’ একই সংগঠনের মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্লাহ বলেন, ‘এই কর্মবিরতি আমরা মানে পরিবহন মালিকরা করছি না। এটা করছেন শ্রমিকরা। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’

শাজাহান খান বলেন, ‘যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’

জানা গেছে, সোমবার রাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের এক সভা নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহাজান খানের বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বেশির ভাগ নেতা মতামত ব্যক্ত করেন যে, ঢাকা ও মানিকগঞ্জের আদালতে দু’জন চালকের শাস্তির আদেশের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে কিংবা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিলে, কেন্দ্রীয়ভাবে নীরবতা পালন করা হবে। এ খবর মোবাইল ফোনে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হলে মঙ্গলবার কোনও ঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘট শুরু হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

নিজ বাসভবনে আয়োজিত সভা প্রসঙ্গে শাজাহান খান বলেন, ‘আমি রাজনীতি করি। আমার বাসায় সভা তো নতুন না। বিভিন্ন ইস্যুতে বাসাতেই আমাদের সভা করতে হয় ।’

বুধবার সকালে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙা সভা করেন পরিবহন সেক্টরের মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে। এরপর বেলা সোয়া দুইটায় পরিবহন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের গাড়ি চালানোর আহ্বান জানান। এর পরপরই ঢাকাসহ বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লা ও সিটি সার্ভিসের যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

/ওএফ/টিএন/