সরেজমিন দেখা গেছে, মালিবাগ রেলগেটের দু’পাশে প্রায় ১৩০ ফুট ব্যবধানে উত্তর-দক্ষিণে দুটি পিলার নির্মাণ করা হয়েছে মালিবাগ-মগবাজার ফ্লাইওভারের জন্য। এই অংশটি দিয়ে রামপুরা থেকে ফ্লাইওভারে যাতায়াত করা যাবে। উত্তর দিকের পিলারের সামনেই পড়ে আছে গার্ডারের ভগ্নাংশ। শত শত উৎসুক মানুষ ভিড় জমিয়েছে পতিত গার্ডার দেখতে। স্থানটি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাঝখানে।
নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম আমিরুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনা ঘটানো গার্ডারের দৈর্ঘ্য ৩৯ মিটার বা প্রায় ১২৮ ফুট। এর ওজন ৬০-৭০ টন। তিনি জানান, সেতু নির্মাণ করতে হলে পিলারের ওপর প্রথমে গার্ডার স্থাপন করতে হয়। পরে এই গার্ডারের ওপর সেতুর ফ্লোর নির্মাণ করা হয়। সেতুর মূল ভার বহন করে গার্ডারই। স্থানীয়রা বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, রবিবার রাতের দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় পতিত গার্ডারকে কেটে দু’ভাগ করে রেললাইনের ওপর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনা কেন ঘটল? এমন প্রশ্নের তাৎক্ষণিক উত্তর পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্ঘটনাস্থলটি তিন রাস্তার মোড়ে। এই পথ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। দিন-রাত রেলগাড়িও চলে। এ কারণে মাটিতে সবসময় কম্পন অনুভূত হয়। এই কম্পনের কারণে পিলারের ওপর থাকা গার্ডার হয়তো নির্দিষ্ট স্থান থেকে সরে গিয়েছিল। ঠিকাদারের লোকজন এটা না বুঝে কাজ করতে যাওয়ায় গার্ডারটি ওপর থেকে পড়ে গেছে।
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক এবং এলজিইডি’র প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সব ঠিকই ছিল। কিন্তু কেন এ দুর্ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত কমিটি হয়েছে। দেখি তারা কি রিপোর্ট দেন।’
তমা কন্সট্রাকশন নামের যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করছে, সে প্রতিষ্ঠান কিংবা নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান এলজিইডির কাউকে পাওয়া যায়নি দুর্ঘটনাস্থলে। তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত। এলজিআরডি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এ ঘটনায় তিনি ক্ষোভ এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, ‘নিহতের পরিবার আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাবেন। আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্তের পর দোষীদের বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেবো আমরা।’
/জেএইচ/