জাল জামিননামায় ৬১ আইনজীবীর স্বাক্ষর, বাঁচিয়ে দিলেন তদন্ত কর্মকর্তা!

কারাগার

বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া জামিননামা তৈরির কাগজপত্রে ৬১ আইনজীবীর স্বাক্ষর থাকলেও তাদের আসামি বা সাক্ষী হিসেবে হাজির না করাকে গাফলতি হিসেবে মনে করেছেন আদালত। বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে ৭৬ টি মামলার ভুয়া জামিননামায় ১০৬ আসামিকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার অভিযোগের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণ অংশে আদালত এ মন্তব্য করেন।

আদালত মনে করেন, তদন্তকারী কর্মকর্তার গাফলতির কারণে মামলাটির নথিপত্রে ৬১ জন আইনজীবীর স্বাক্ষর পাওয়া গেলেও তাদের কাউকে আসামি বা সাক্ষী কিছুই করা হয়নি। এ কারণে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সফিউল্লাহর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেও মনে করেন আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে তদন্ত কর্মকর্তা মো. সফিউল্লাহর গাফলতি নজরে পরায় দুদকের মহাপরিচালক বরাবর রায়ের কপি পাঠিয়ে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার বিশেষ জজ আদালত আখতারুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। তিনি রায়ে ৫ আসামির প্রত্যেককে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৩ ধারায় ৭ বছর ও ৪৭১ ধারায় ৭ বছর করে মোট ১৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। কিন্তু, দুটি সাজা একসঙ্গে কার্যকর হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে প্রকৃতপক্ষে ৭ বছর করে কারাভোগ করতে হবে।

রায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ঢাকা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক বেঞ্চ সহকারী মোসলেহ উদ্দিন ভুইয়া, আদালতের স্টাফ মো. নাঈম ও ৩ জন উমেদার আলমগীর হোসেন, মো. ইসমাইল ও মো. জাহাঙ্গীর। এর মধ্যে উমেদার আলমগীর হোসেন ও মো. জাহাঙ্গীর উভয়েই শুরু থেকে পলাতক আছেন। রায় শুনে আদালতের স্টাফ মো. নাঈম কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এর আগে ২০১৫ সালে ১২ জুলাই নাসির উবায়দুল করিম আকন্দ বাদী হয়ে কোতায়ালি থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সফিউল্লাহ ২০১৬ সালে এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২০১৬ সালের ১৫ জুন বিশেষ জজ আদালত আখতারুজ্জামান তাদের ‍বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মোট ৩৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত।

/ইউআই/টিএন/