‘প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে দেশের ক্ষতি করানো হচ্ছে কি?’

সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল। ছবি: ফোকাস বাংলা

রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে দেশের ক্ষতি করানো হচ্ছে কি? প্রশ্ন রেখে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্ববায়ক ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, রামপালে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে। তিনিও রাজি হয়েছেন। কিন্তু তাকে দিয়ে দেশের ক্ষতি করানো হচ্ছে কি না সে বিষয়ে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।

বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সুলতানা কামাল বলেন, আমরাও বিশ্বাস করতে চাই বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশের ক্ষতি হোক এমন কোনও কাজ করবেন না। কিন্তু তাকে ভুল বুঝিয়ে তাকে দিয়ে দেশের ক্ষতি হয় এমন কাজ করানো হচ্ছে কি না সে বিষয়ে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।

কোনও ধরনের পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই এক প্রকার জোর করে সরকার রামপালে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয় আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বিকল্প জায়গার কথা বলি না কেন? আমি তাদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই বিকল্প জায়গা নির্ধারণের কাজ কি আমাদের? আমরা পরিবেশবাদী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন প্রকল্পের সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। আমরা বারবার বলছি এই প্রকল্প দেশের ক্ষতি করবে, তবুও জোর করেই তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ জনগণ আসলে পাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি রামপালের আশেপাশে ৩০০শ’র ওপরে শিল্প কারখানার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব কারখানায় এই প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে আর বিদ্যুতের দামও অনেক বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই এখন বলা মুশকিল যে সাধারণ জনগণ এই প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ পাবে কিনা?

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে একটি নিয়ম এখন চালু হয়েছে। কোনও প্রকল্প শুরুর আগে সরকার এক ধরনের কথা বলে, আর যখন কাজ শুরু হয় তখন অন্য ধরনের কথা বলে। যখন দেখে প্রকল্পে ঝামেলা সৃষ্টি হচ্ছে তখন মাঝপথে বন্ধ করে দেয়।

সভায় কলামিস্ট আবুল মকসুদ বলেন, রামপাল নিয়ে সরকারের মধ্যে একটি ‘আল্ট্রা সুপার ম্যাডনেস’ কাজ করছে। কোনও ধরনের বিশেষজ্ঞ মতামত ছাড়াই সরকার জোর করে এই প্রকল্পের কাজ করে যাচ্ছে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ আকাশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল আজিজ প্রমুখ।

/আরএআর/টিএন/