‘আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে বিশ্ববাসীকে গণহত্যার চিত্র দেখানো হবে’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, ছবি- অনলাইন থেকে সংগৃহীত২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেতে সব ধরনের চেষ্টা চালানো হবে উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘আমাদের দেশের নির্মম গণহত্যার চিত্র বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে এর গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। তারপর জাতিসংঘের কাছে যাবো। এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না দেওয়ার কোনও কারণ নেই।’
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স কক্ষে ‘জাতীয় গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এখন যে ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালন করা হয়,তার পেছনে তেমন কোনও কারণ নেই।এর তেমন কোনও ইতিহাস নেই। কিন্তু ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার যথেষ্ট উপযুক্ত কারণ রয়েছে।এর পেছনে অনেক বড় একটি ইতিহাস রয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের নির্মম গণহত্যার চিত্র বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে এর গুরুত্ব তুলে ধরা হবে। সব দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।তাদের বোঝানো হবে তারপর আমরা জাতিসংঘের কাছে যাবো। এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না দেওয়ার কোনও কারণই নেই।আমাদের যুক্তি অত্যন্ত প্রকট।’
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তাকে উদ্দেশ মন্ত্রী বলেন,‘পাকিস্তানীদের তাণ্ডবে এত বাঙালি মারা যায়নি। সংখ্যা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। আমার কথা হলো, সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানেই মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।গণহত্যার যে ছবি আগে সেগুলো হিসাব করলেও তো লক্ষাধিক হবে। বিতর্কের খাতিরে আমি না হয় মেনেই নিলাম ১০ জন মারা গেছেন। তবুও সেই হত্যাকাণ্ড কি মেনে নিতে হবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘গণহত্যার সংজ্ঞায় কি কোথাও বলা আছে যে, নির্দিষ্ট পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হলেই কেবল তাকে গণহত্যা বলা যাবে? তা-তো নেই। বরং গণহত্যার সংজ্ঞা হলো, কোনও জাতি গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার জন্য যে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়, সেটাই গণহত্যা। এই যুক্তিতে একশ’ মানুষ মারলেও তো গণহত্যা।’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চিন্তাভাবনা করেছি, আগামী বছরে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পড়ানোর জন্য ২৫ মার্চ নিয়ে আলাদা লিফলেট দেওয়া হবে। যা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদেরকে বোর্ডে লিখে পড়াবেন। যেমন, প্রথম শ্রেণির জন্য দেওয়া হবে, ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা বাঙালির ওপর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য আরও একটু বিস্তারিত দিয়ে আলাদা আলাদা লেখা দেওয়া হবে। এভাবেই আমার ২৫ মার্চের গণহত্যা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাবো।’

বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের সভাপতি ড.এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির,শহীদ ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ড. নুজহাত চৌধুরী, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু প্রমুখ।

/আরএআর/  এপিএইচ/