নিভে গেছে স্বপ্ন, এখন শুধু বেঁচে থাকা



রিকশাচালক জাহিদুলস্বপ্ন নিয়ে রাজধানীতে রিকশা চালাতে এসেছিলেন বগুড়ার জাহিদুল। কিন্তু সুখ সইলো না কপালে। একটি মাইক্রোবাস তার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিলো। দুর্ঘটনায় আহত জাহিদুল এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার ডান-পা কেটে ফেলা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় অকালে পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে তাকে। এখন জাহিদুলের চিকিৎসা নিয়েও শংকিত তার পরিবার।


গত ২১ মার্চ ঢাকা মেডিক্যালের বহির্বিভাগ সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে বেপরোয়া মাইক্রোবাস চাপায় গুরুতর আহত হন জাহিদুল। এ দুর্ঘটনায় তার ডান পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে অপারেশন করে চিকিৎসকরা তার ডান পা কেটে ফেলেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বেডে এখন চিকিৎসাধীন জাহিদুল। পাশে রয়েছেন তার স্ত্রী রুপালী বেগম ও দুই ছেলে রুবেল ও রাকিব।
রুপালী বেগম জানান, তার স্বামী জাহিদুল এলাকায় কৃষি জমিতে কাজ করতেন। কিন্তু এ থেকে যা উপার্জন হতো তা দিয়ে সংসার চলতো না। এদিকে জাহিদুলের স্বপ্ন ছিল দুই ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার। এমন স্বপ্ন নিয়েই বগুড়ার ধুনট উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সুতাহাটা থেকে ৭-৮ বছর আগে তিনি চলে এসেছিলেন ঢাকায়। তিনি কামরাঙ্গীরচরের মুন্সিহাটি এলাকায় মেসে থেকে রিকশা চালাতেন। তার উপার্জনের টাকায় সংসার খরচের পাশাপাশি চলতো রুবেল ও রাকিবের লেখাপড়ার খরচ। রুবেল স্থানীয় স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং রাকিব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। এদিকে দুর্ঘটনায় জাহিদুলের পা হারানোর পর দু’চোখে শর্ষেফুল দেখছেন রুপালী বেগম। এখন তার কান্নাই ভরসা। তিনি বলেন, আজ আমার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। এখন কীভাবে চলবে আমাদের সংসার। তার তো উপার্জনের একটি টাকাও জমা নেই। এমনিতেই সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যেতো। এখনতো উপার্জনক্ষম মানুষটিও পঙ্গু। তাহলে কী আমার ছেলেদের পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যাবে। এখন আমি কী করবো।

/টিএন/আপ-এআর/