হাওরে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াবার আহ্বান

নেত্রকোনার সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর ত্রাণমন্ত্রীর ক্ষোভ

ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ানেত্রকোনা জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। সোমবার রাতে নেত্রকোনা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় হাওরের ক্ষয়ক্ষতি ও তা কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে জেলার সরকারি কর্মকর্তারা কোনও ধারণা না রাখায় মন্ত্রী এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এসময় মন্ত্রী জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াবার আহ্বান জানান। এছাড়া কর্মকর্তাদের আগামী ২৬ এপ্রিল দুপুর ১২টার মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে হাওরের ক্ষয়ক্ষতি এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায় সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
সোমবার রাত ৮টা থেকে পৌনে ১১টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামালের সঞ্চালনায় জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার প্রথমে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী জেলায় চলমান বন্যা মোকাবিলায় করণীয় এবং বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগাম পরিকল্পনা সম্পর্কে জেলা কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান। এসময় কোনও কর্মকর্তাই কোনও জবাব দিতে পারেননি মন্ত্রীকে। কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সভা সূত্র জানায়, মন্ত্রী প্রথমে জেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু ওই কর্মকর্তা এই বিষয়ে মন্ত্রীকে কোনও কিছুই পরিষ্কার করে জানাতে পারেননি। একইভাবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, জেলা জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী, সিভিল সার্জন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, এলজিআরডির নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা সমবায় অফিসারও মন্ত্রীকে দুর্যোগ বিষয়ে নিজ নিজ দফতরের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জবাব দিতে পারেননি।

এর আগে, সভার শুরুতে জেলা প্রশাসক ড. এম মুশুফিকুর রহমান জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, বন্যায় জেলার ১ হাজার ১৮০ মেট্রিক টন মাছ মারা গেছে। আট লাখ ১৩ হাজার গবাদি পশুর মধ্যে ৪ লাখেরও বেশি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত জেলায় গরু এবং হাঁস মারা যায়নি, তবে গরুর খাদ্য সংকট রয়েছে।

৫০ কিলোমিটার বাঁধ প্রতিবছরই ঝুঁকিতে থাকে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক জানান, এবছর ৩৯০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসময় জেলা প্রশাসক নেত্রকোণা জেলার জন্য ৭৫ হাজার ভিজিএফ কার্ড ও প্রতিটি ইউনিয়নে ১ জন করে ওএমএস ডিলার চেয়েছেন মন্ত্রীর কাছে।

জেলা প্রশাসক ড. এম মুশুফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় নেত্রকোনা-২ আসনের সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, নেত্রকোণা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায়, নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছবি ব্শ্বিাস, নেত্রকোনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইফতেখার উদ্দীন তালুকদার, নেত্রকোনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেবেকা মোমিন ও নেত্রকোনা- ৫ আসনের সংসদ সদস্য ওয়ারেশাদ হোসেন বেলালসহ সব উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার, স্থানীয় সাংবাদিক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

/এমও/