হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি সুজনের

সুজনের সংবাদ সম্মেলন

ক্ষতিগ্রস্ত হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা ও সেখানকার মানুষকে জরুরি সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘হাওর এলাকার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন। এমন পরিস্থিতির কারণ যেমন প্রাকৃতিক, তেমনি মানবসৃষ্ট। যাদের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এত বিপর্যয় ও ক্ষয়ক্ষতির পরেও কেন এ অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হলো না।’

সংবাদ সম্মেলনে একজন সচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করে সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘সরকারের একজন সচিব বলেছেন, কোনও এলাকার অর্ধেক মানুষ মারা না গেলে নাকি দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা যাবে না। কিন্তু তিনি কথাটি কিসের ওপর ভিত্তি করে বলেছেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়। এমন বক্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

এসময় ক্ষতিগ্রস্ত হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান সুজন সম্পাদক।

সংবাদ সম্মেলনে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু সরকারি কর্মকর্তার কারণে হাওর অঞ্চলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হাওরের বাঁধগুলো সঠিকভাবে আটকানো হলে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। সরকারের ভুলের কারণে বন্যাকবলিত ৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ সর্বহারা হয়ে গেছেন। এ পরিস্থিতি থেকে সরকারের কিছু যেন শেখার নেই। সরকারের কখনও শিক্ষা হবে না। যদি হতো তবে দেশের ৬ জেলার বাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, হাওর এলাকা ডুবে গেছে, আগামী বৈশাখের আগে ওই এলাকা ভাসবে না। এই মৌসুমে আর ফসল ফলানোর সুযোগ নেই। কোনও সবজি ফলানোর সম্ভাবনা নেই। সুতরাং এসব এলাকায় খাদ্য সরবরাহে সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাওর এলাকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন সুজনের সহযোগী সমন্বয়কারী সানজিদা হক বিপাশা। তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের আলোকে ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার সুপারিশ করেন। এছাড়া কৃষকদের জরুরি সহায়তা ও পুনর্বাসন, বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত, দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া, দুর্নীতির অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত নিয়ে আসার পদক্ষেপ নেওয়াসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। এ ছাড়া হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ জরুরি ভিত্তিতে মেরামত, যুগোপযোগী, ডিজাইনে পরিবর্তন আনা, শুকনো মৌসুমে নদ-নদী, খাল-বিল ও হাওর খনন করাসহ স্থায়ী ও টেকসই সমাধান এবং স্বল্পমূল্যে খোলাবাজারে খাদ্যদ্রব্য বিক্রির ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সুজনের নির্বাহী সদস্য সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জাতীয় কমিটির সদস্য স্বপন আদনান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 /আরএআর/এসএমএ/টিএন/