রাঙামাটি-বান্দরবানের যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে সেনাবাহিনী

 

রাঙামাটি-বান্দর সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে কাজ করছেন সেনাবাহিনী (ছবি: আইএসপিআর)ভূমি ধসের ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া রাঙামাটি ও বান্দরবানের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছে  বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত দুর্গত পরিবারের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলাসহ জরুরি ত্রাণ ও চিকিৎসা সেবাও দিচ্ছেন এ বাহিনীর সদস্যরা। রবিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে  এই তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়,  সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত রাঙামাটির বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক হাজার ৫০০ জনকে খাদ্য ও ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া তারা প্রায় সাত হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানিও বিতরণ করা হয়। সেনাবাহিনীর রাঙামাটি রিজিয়নের পক্ষ থেকে একটি পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। আগামীকাল থেকে ওই প্ল্যান্টের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাধানে সব শেল্টার সেন্টারে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা হবে। সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল টিম প্রায় এক হাজার মানুষকে চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছে। দুর্গত এলাকায় জ্বালানি সংকট দেখা দেওয়ায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রায় আট হাজার লিটার তেল বিতরণ করা হয়েছে।

আইএসপিআর আরও জানায়, রাঙামাটিতে মোট ১৯ টি শেল্টার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৫০০টি পরিবারের দুই হাজার ১২৪ জন পাহাড়ি-বাঙালি আশ্রয় নিয়েছে। সেনাবাহিনী সাতটি শেল্টার সেন্টারের সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, যুব উন্নয়ন কমপ্লেক্স, মনোঘর ভাবনা কেন্দ্র, বাংলাদেশ সরকারি কলেজ ও গোধুলী আমানবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই সাতটি শেল্টার সেন্টারে এক হাজার ২২৬জন দুর্গত পাহাড়ি-বাঙালি আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের খাবার ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতি সদস্যের জন্য দৈনিক ৪০০ গ্রাম চাল ও ৪০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনীর তিনটি মেডিক্যাল টিম নিয়মিতভাবে এ সব শেল্টার সেন্টার পরিদর্শন করছেন এবং অসুস্থদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

ঘাগড়া ও মানিকছড়ির মধ্যবর্তী স্থানের রাস্তাটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাতছড়ি নামক স্থানে ১০০ মিটার রাস্তা সম্পূর্ণ দেবে যাওয়ায় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন পাহাড় কেটে বিকল্প রাস্তা তৈরি করছে। আগামী দু’দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে মাঝারি ধরনের যান চলাচলের জন্য উপযোগী হবে। এছাড়া বান্দরবনের চিম্বুক-রুমা সড়কের এখন পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা যোগাযোগের উপযোগী করা হয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন রাঙামাটি বান্দরবনে ব্যাপক ভূমিধসের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করার সময় তাদের ওপর পাহাড় ধসে পড়ায় ২ কর্মকর্তাসহ ৫ জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন।

/জেইউ/এমএনএইচ/