তবে ব্যস্ত শহরের সঙ্গে খাপ খেয়ে ওঠা মানুষগুলোর কাছে এমন আমেজ ভালো লাগছে না! যারা কর্মব্যস্ততার জন্য ঢাকা ছাড়তে পারেননি তাদের জন্য ঈদে শহরে থাকা হয়ে ওঠে কষ্টের আরেক নাম। বিশেষ করে খাবার হোটেলের স্বল্পতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যাচেলর ও শ্রমজীবী মানুষ। তাছাড়া রয়েছে যানবাহনের সংকট।
ফাঁকা ঢাকা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পরিচিত মুখগুলোকে দেখছি না বলে খারাপ লাগছে। বন্ধুবান্ধব সবাই গ্রামে চলে গেছে। দোকানপাটও প্রায় সবই বন্ধ। এ কারণে হলে নিজেই রান্না করে খেতে হচ্ছে। আসলে ঢাকা যেমন ছিল তাকে তেমনই মানায়।’
ছুটি না পেয়ে অফিস করতে হচ্ছে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের সংবাদকর্মী ফয়সাল উদ্দিনকে। তিনি বলেন, ‘এখন পথে পথে শুধু বিড়ম্বনা। কোথাও গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় না। অফিসেও কাছের অনেকেই নেই। পরিচিত মুখগুলো না দেখে একাকী লাগছে। রাস্তাঘাটে যেমন নীরবতা, ঠিক তেমনই মনের ভেতরও এক ধরনের শুন্যতা বিরাজ করছে বলতে পারেন।’
ঈদের পরদিন মঙ্গলবার (২৭ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ রাস্তাঘাট সুনসান। অল্প সময়ে পৌঁছা যাচ্ছে গন্তব্যে। ফাঁকা রাস্তায় দ্রুতগতিতে ছুটছে যানবাহন। এই সুযোগে অতি ‘মডার্ন’ তরুণ ও যুবকরা দ্রুতগতিতে চালাচ্ছে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার। মাঝে মধ্যে যে কয়টি বাস দেখা যাচ্ছে সেগুলোর গতিও ছিল সর্বোচ্চ।
মঙ্গলবার সকালে বুকে ব্যথা নিয়ে বনশ্রীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ। কিন্তু বিশেষজ্ঞ কোনও চিকিৎসক পাননি তিনি। কারণ সবাই ছুটিতে। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক ছাড়া অভিজ্ঞ কেউই নেই। বাধ্য হয়েই চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে হয়েছে তাকে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন। অধিকাংশ ক্লিনিকের চিকিৎসকরা ছুটিতে থাকায় রিপোর্ট পেতেও তাকে অপেক্ষা করতে হবে আরও দুই দিন।’
সরকারের সাবেক এই কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে আরও বলেন, ‘ভেবেছিলাম ঢাকায় একটু নীরবতার মধ্যে থাকবো। এজন্য এ ঈদে বাড়ি যাওয়া হয়নি। কিন্তু এখন দেখছি অনেক দুর্ভোগ! চিকিৎসক নেই। রাস্তাঘাটে যানচলাচলও খুব কম। হোটেল-রেস্তোরাঁও খোলা পাওয়া যাচ্ছে না তেমন। আছে শুধু একটু সুনসান নীরবতা। এ দিয়ে কি আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের দৈনন্দিন জীবন চলে?’
/এসএস/জেএইচ/