‘অন্যরা খায়, আমাদের সন্তানরা চেয়ে থাকে’

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তৃতীয় ধাপে বাদ পড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন

বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সন্তানরা ভালোভাবে খেতে পায়। আর আমাদের সন্তানদের সেদিকে চেয়ে থাকতে হয়। আমরা কোনও বেতনভাতা পাচ্ছি না। কোনোমতে বেঁচে থেকে পাঠদান করে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা যখন আমাদের কাছে উপ-বৃত্তির টাকা চায়, আমরা তা দিতে পারি না। তখন আমাদের মন দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।

বুধবার (২৬ জুলাই) বৃষ্টি উপেক্ষা করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে সংগঠনটির নেতারা এসব কথা বলেন। সারাদেশের বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো জাতীয়করণের দাবিতে এ মানববন্ধন করা হয়। এসময় সারাদেশ থেকে আসা পাঁচ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

মানববন্ধনে বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আ স ম জাফর ইকবাল বলেন, ‘২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। কিন্তু তৃতীয় ধাপে উপজেলা ও জেলা যাচাইবাছাই কমিটির সুপারিশ করা বিদ্যালয়গুলোকে বাদ দিয়ে চলতি বছরের ২৩ মার্চ ৩০৩টি অযোগ্য বিদ্যালয়ের গেজেট প্রকাশ করা হয়। ইতিমধ্যে ইউএনডিপি পরিচালিত ২১০টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও ২৬ হাজার ১৯৩টি স্কুলকে জাতীয়করণের বাহিরে রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স জাতীয়করণ কমিটি সরকারিভাবে যাচাইবাছাই করার পরও এক হাজার ৩০০ বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এছাড়া সরকারের সব শর্ত পূরণ করার পরও আরও বেশ কিছু স্কুল জাতীয়করণের বাইরে রয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সর্বশেষ ৯৬০টি বিদ্যালয় জাতীয়করণের তালিকাভূক্ত ছিল। তদন্তের মাধ্যমে ৫৩৩টি বিদ্যালয় তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণ করা হয়। এরপর আরও ৩১১টি অযোগ্য স্কুল রাতারাতি জাতীয়করণ করা হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে খবর প্রকাশ হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কর্মরত শিক্ষকদের বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য জাতীয়করণযোগ্য ও যাচাইবাছাই সমাপ্ত হওয়া বিদ্যালয়গুলোসহ বাদ পড়া বিভিন্ন বিদ্যালয়ের জাতীয়করণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’

সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. ছালেহ উদ্দিনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির মহাসচিব আলহাজ মো. মনছুর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনাজ পারভীন, মহিলা সম্পাদক মঞ্জুয়ারা বেগম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. মামুনুর রশিদ খোকন। অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন- সংগঠনের মহাসচিব মো. কামালা হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফুল আলমসহ অনেকে।

/আরএআর/এমএ/