সাংবাদিকদের জন্য নতুন বেতন কাঠামোর প্রয়োজন নেই: অর্থমন্ত্রী

 

আবুল মাল আবদুল মুহিত (ফাইল ছবি: সংগৃহীত)সাংবাদিকদের জন্য নতুন কোনও বেতন কাঠামোর প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের যে বিদ্যমান বেতন কাঠামো আছে, যে পাঁচটি বেতন স্তর আছে, তা প্রায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পে-স্কেলের সমান। কাজেই সাংবাদিকদের জন্য নতুন করে আর বেতন কাঠানোর প্রয়োজন নেই।’ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ-মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা থেকে যত পত্রিকা প্রকাশিত হয়, এরমধ্যে দশ/বারোটি, সর্বোচ্চ ২০টি ছাড়া অল আর রাবিশ, বোগাস। এসব পত্রিকায় কোনও সাংবাদিক নেই। এসব পত্রিকা বিনা শুল্কে কাগজ তোলে, সরকারের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নেয়। এসব পত্রিকার জন্য ওয়েজবোর্ড দেবো?’

এ সময় অর্থমন্ত্রীকে সাংবাদিকরা বলেন, ‘আপনাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশন ওয়েজবোর্ডের আওতায় নয়, এখানে কোনও বেতন কাঠামো নেই। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের এই বক্তব্য ঠিক নয়। সব সমান। সবার জন্যই ওয়েজবোর্ড আছে।’ তখন সাংবাদিকরা বলেন,  ‘স্যার আপনাকে ভুল বোঝানো হয়েছে।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নোয়াব নেতারা অর্থমন্ত্রীকে সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর যে ৫টি ধাপ দেখিয়েছেন, সেখানে সর্বনিম্ন  বেতন দেখানো হয়েছে ১৮ হাজার ৫০০টাকা। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখেছি,   আপনাদের সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো আর সরকারি কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন স্কেলও প্রায় সমান।’

এ সময় সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করে একজন শিক্ষানবিস সাংবাদিক মাত্র ‘৮ হাজার টাকায় টেলিভিশনে কাজ করেন।’ জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা সত্য নয়।’

ঢাকা শহরে দশ/বারোটার বাইরে থাকা সব পত্রিকাকে বোগাস বলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা বলেন, ‘বোগাস পত্রিকাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন?’ জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি।’

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো সমান নয় উল্লেখ করে সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। আপনি সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বসুন।’ এ সময় তিনি বলেন, ‘আপনাদের এত সংগঠন, আমি কার সঙ্গে বসব।’

জবাবে সাংবাদিকরা বলেন, ‘ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)—এই চার সংগঠনের সভাপতি ও সাংবাদিক সম্পাদকের সঙ্গে বসুন।’ সাংবাদিকদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন,  ‘দেখি, আমি বসবো।’

নোয়াবের সঙ্গে বৈঠক বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এই মিটিংয়ে আমরা তাদের কথা শুনেছি। কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা সরকারের লোকজনের সঙ্গে পরে বসব। তারপর সিদ্ধান্ত নেবো।’ 

অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নোয়াবের সভাপতি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, সমকাল প্রকাশক এ কে আজাদ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মর্তুজা আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, ডিএফপির মহাপরিচালক ইসতাক আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

/এসআই/এমএনএইচ/