এবিএম খায়রুল হক বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি কি প্রধান শিক্ষক, আর অন্য বিচারপতিরা ছাত্র নাকি যে, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তাকে (প্রধান বিচারপতি) অন্য বিচারপতিদের পরিচালনা করতে হবে? সংবিধানের ৯৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুসারে তো বিচারপতিরা সবাই স্বাধীন।’
তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে সংবিধানের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনতে হলে আবারও সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সংবিধানে যেহেতু সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ছিল না, সেহেতু এটা রাখা সংবিধান পরিপন্থী।’ ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায়টি অপরিপক্ক, পূর্বপরিকল্পিত ও অগণতান্ত্রিক।’
সাবেক এই প্রধান বিচারপতি আক্ষেপ করে বলেন, ‘সংবিধানে ১ নম্বর অনুচ্ছেদে গণপ্রজাতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই রায় দেশকে বিচারিক প্রজাতন্ত্রের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে মার্শাল ল' আমলে চলে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে দুদককে চিঠি দিয়ে সাবেক বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়, সেখানে তাদের ওপর (সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সদস্য বিচারপতিদের) নির্ভর করবো কিভাবে?’
তিনি বলেন, ‘ওই রায়ে পার্লামেন্ট মেম্বারদের ইম-ম্যাচিওর বলা হয়েছে। যেটা এখানে বলার কোনও দরকার ছিল না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রথম কোনও রায়ে দেখলাম, যেখানে অরিজিনালকে বাদ দিয়ে মার্শাল ল’ এর প্রভিশনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’
আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। যে কোনও রায় প্রকাশ হওয়ার পর দেশের যে কেউ সেই রায় নিয়ে সমালোচনা করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি ষোড়শ সংশোধনীর রায় পড়ে দেখেছি যে, এই রায়ে অনেক অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য রয়েছে। যেসব কথার কোনও প্রয়োজনই এই রায়ে ছিল না।’ সাবেক প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সংসদ ভুল করলে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগ আছে। সুপ্রিম কোর্ট ভুল করলে আমরা যাবো কোথায়?’ এই রায়ের মাধ্যমে জুজুর ভয় দেখানো হচ্ছে এবং সংসদ সদস্যদের হেয় করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এমটি/এএম/ এপিএইচ/