ঝুঁকির মুখে বালুখালী পাহাড়ের রোহিঙ্গারা

পাহাড়ের ওপর ঘর বানিয়ে বালুখালি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন রোহিঙ্গারাকক্সবাজারের বালুখালী ক্যাম্পের পাহাড়ে বসবসকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ঝুঁকি নিয়েই জীবন যাপন করছেন। সম্প্রতি পাহাড় ধসে চারটি ঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর এমনটাই আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সরেজমিন পরিদর্শনে সমতলে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদেরও মানবেতর জীবন যাপনের চিত্র দেখা গেছে।           
বালুখালি ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের দেখভাল করার জন্য ৩৫ জন সমন্বয়ক রয়েছেন। এদের বলা হয় ‘মাঝি’। এই ৩৫ জন সমন্বয়কের প্রধান হচ্ছেন— লালু মাঝি। মিয়ানমার থেকে তিনি বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন গত বছরের ডিসেম্বরে। ক্যাম্পে অবস্থান নেওয়া লালু মাঝি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে।’

পাহাড়ের ওপর ঘর বানিয়ে বালুখালি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন রোহিঙ্গারা ১আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সংস্থার হিসাব অনুযায়ী গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। এর একটি বড় অংশ বালুখালি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। এ ক্যাম্পে বর্তমানে চার হাজারের অধিক পরিবার বাস করছে। বর্তমানের রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি।

স্থানীয়রা জানান, গত অক্টোবরের পরে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছেন, তার একটি অংশ বালুখালির পাহাড় এবং এর পাশের সমতল ভূমিতে বসবাস করছেন। অস্থায়ী ঘর তৈরি করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সতলের রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা শিশুরা বালুখালি ক্যাম্পে বৃষ্ঠির মধ্যে খেলা করছেসরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যে পাহাড়ে তারা ঘর বানিয়ে রয়েছেন, সেটি ধসে যাওয়ার মতো অবস্থা দেখা যাচ্ছে। 

বালুখালীর স্থানীয় একজন বাংলাদেশি জানান, কিছুদিন আগে একটি পাহাড় ধসে চারটি ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। বনবিভাগের জমির ওপর ঘর বানিয়ে রোহিঙ্গারা অবস্থান নিয়েছেনি।

লালু মাঝি আরও  বলেন, ‘বালুখালি ক্যাম্পে বর্তমানে চার হাজারের বেশি পরিবার রয়েছে বালুখালী ক্যাম্পে। ওই রোহিঙ্গাদের আংশিক ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম রেশন সরবরাহ করে এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বাসস্থান ও শৌচাগার নির্মাণের কাজে সহায়তা করছে।’

পাহাড়ের ওপর ঘর বানিয়ে বালুখালি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন রোহিঙ্গারা ২দেখা গেছে, এ ক্যাম্পে তিনটি স্কুল বিল্ডিং এ সাতটি ক্লাস রুম রয়েছে। যেখানে আটজন শিক্ষকের সহায়তায় প্রায় ৭৫০ রোহিঙ্গা শিশু লেখাপড়া করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষক বলেন, তারা গত মার্চ থেকে পাঠদানের কাজ শুরু করেছেন। এখানে ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীর অনুপাত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৫০ শতাংশের বেশি মেয়ে।