‘মৌলবাদী চক্র রোহিঙ্গাদের উসকানি দিচ্ছে’

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদমৌলবাদী একটি চক্র কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের উস্কানি দিচ্ছে। ফলে তারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের দিকে ঝুঁকে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ।

রোহিঙ্গা বিষয়ে জাতীয় টাস্কফোর্সের ১৪তম বৈঠকে যোগ দিতে কামাল উদ্দিন আহমেদ এখন কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকালে তার সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে মৌলবাদীরা সক্রিয়। রোহিঙ্গারা যদি মৌলবাদীদের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তবে তা বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং এমনকি বিশ্বের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে অনেক জঙ্গি আস্তানা ধ্বংস করেছি। অনেক বড় বড় জঙ্গি নেতাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে কিনা- তা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব না।’

টেকনাফের হ্ণীলা অনিবন্ধিত শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা (ফাইল ফটো)কামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের অধিবাসী। কিন্তু তাদের নাগরিক হিসাবে স্বীকার করা হয় না। তারা নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত, নিয়মিত সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের শিকার এবং রাখাইনের অন্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে পরিত্যাজ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘যখন কারও পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়, তখন সে যেকোনও কাজ করতে পারে। তাই মৌলবাদীরা তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নেবে, এটাই স্বাভাবিক। এ বিষয়টি আমরা জানি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের গোয়েন্দা ও অন্যান্য বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে তৎপর আছে।’

কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা (ফাইল ফটো)'রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে নির্যাতিত হচ্ছেন, তাদের হত্যা করা হচ্ছে, তাদের মেয়েদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। তাই তারা বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে' বলেও জানান তিনি।

কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হলেও মানবিকতার খাতিরে গত কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়ে আসছি। আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব, তাদেরকে আমরা খাবার, থাকার জায়গা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এরফলে বাংলাদেশের অনেককে কষ্ট স্বীকার করতে হচ্ছে।’

উদাহারণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের বনবিভাগের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে এবং স্বাভাবিক কারণে বনের কিছু গাছপালা তারা কেটে ফেলে পরিবেশের ক্ষতি করছে। তাছাড়া বাংলাদেশের মানুষ কোনও কাজের জন্য ৫শ’ টাকা মজুরি চাইলে একজন রোহিঙ্গা সেটা ২শ-৩শ’ টাকায় করে দেন। ফলে শ্রমবাজারে একটি ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে।’

আরও পড়ুন- ‘অত্যাচারের ভয়ে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসা আশা করে না বাংলাদেশ’