‘রোহিঙ্গাদের বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের নাই’

সচিবালয়ে ওবায়দুল কাদের (ওবায়দুল কাদেরের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত)বাংলাদেশ সতর্কতার সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  তিনি বলেছেন, ‘একদিকে রোহিঙ্গাদের পুশইনের প্রতিবাদ করছি, অন্যদিকে তাদের প্রতি মানবিক আচরণও করছি। তাদের পুশব্যাক করছি না। রোহিঙ্গাদের এই বিরাট বহর বহন করার সাধ্য আমাদের নাই।’

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সতর্কতার সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির মোকাবিলা করছি। একদিকে রোহিঙ্গা স্রোত ছুটে আসছে যা উদ্বেগজনক। দেড় লাখ রোহিঙ্গা চলে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলেছেন। আমরা তার নির্দেশে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি। বিষয়টি জাতিসংঘকে জানিয়েছি। এত মানুষের ভার বহন করার সক্ষমতা আমাদের নাই।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের স্রোতের সঙ্গে মাদক, অস্ত্র যুক্ত হচ্ছে কিনা তা আরও উদ্বেগজনক। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলেছি তারা যেন রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। রোহিঙ্গাদের যেভাবে গানপাউডার ছিটিয়ে, আগুন দিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে তা মানবতাবিরোধী। ওই নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য রোহিঙ্গারা যে পথে আসছে সে পথটাই রক্তস্রোতে পরিণত হয়েছে। নাফ নদীতে ওরা ডুবেও মারা যাচ্ছে।’ঘুমধুম সীমান্তে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা (ছবি: প্রতিনিধি)

হাওড়ে পানি বেড়ে ও অন্যান্য এলাকায় বন্যায় দেশের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের বিশাল বোঝা বহন করা বড় কঠিন। মিয়ানমারকে বলেছি সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে নিরীহ রোহিঙ্গাদের হত্যা বন্ধ করতে হবে। বিষয়টি আমরা চারবার মিয়ামারকে বলেছি।’

তিবি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিএনপি আগামীকাল (শুক্রবার) যে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সে কর্মসূচি নিয়ে আমি নিজেই উদ্বিগ্ন। বিভিন্ন সময় কর্মসূচি পালনের নামে বিএনপি নিজেরা নিজেরাই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এবার রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণ দেখাতে গিয়ে না জানি নিজেরাই কোন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। কারণ তারা নিজেরা সংষর্ঘে লিপ্ত হয়ে সরকারের ওপর দোষ চাপায়।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে নির্বাচন এলে সুবাতাস বইবে এটাই স্বাভাবিক। বিএনপি এবার মাইনকা চিপায় পড়েছে। কারণ তারা কোন দিকে যাবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না তাও পরিষ্কার না। নির্বাচনে না গেলে তারা সব কূল হারাবে। অপরদিকে নির্বাচরে না গিয়ে যদি গতবারের মতো জ্বালাও পোড়াও করে তাও জনগণ মানবে না। তাই তো হায়দার হোসেনের গানের সুরে বলতে হয়, বিএনপি মাইনকা চিপায় পড়েছে।’  

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনকালীন সময় যে সরকার ব্যবস্থা থাকে বাংলাদেশেও ওই একই ব্যবস্থা থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘এ নিয়ে আলোচনার কিছু নাই। সরকারের অবস্থান ঠিক আছে।’

আরও পড়ুন- সংঘাতে না জড়িয়েই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চায় বাংলাদেশ