বার্নিকাট সাংবাদিককের বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত এক বছরে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র ৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার সহায়তা দিয়েছে।’ রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন বলেও জানান তিনি।
তথ্য মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গত সোমবার জানিয়েছে, ১৯৭৮ সালের মাঝামাঝি মিয়ানমার সরকারের ‘অপারেশন ড্রাগন’ নামে পরিচালিত অভিযানে সহিংসতার শিকার হয়ে দুই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পরে তাদের অধিকাংশকেই প্রত্যাবাসন করা হয়। এরপর ১৯৯২ সালে প্রায় দুই লাখ ৭০ হাজার শরণার্থী আসে। এদের মধ্যে দুই লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জন শরণার্থী ফেরত গেলেও রয়ে যায় প্রায় ৩৪ হাজারের মতো রোহিঙ্গা। এরপর বিভিন্ন সময় একই ধরনের সহিংসতার শিকার হয়ে চার লাখের বেশি মিয়ানমার নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রমতে বর্তমানে প্রায় ৮ লাখ মিয়ানমার নাগরিক কক্সবাজারে অস্থায়ী ক্যাম্পে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন দেশ ত্রাণ কার্যক্রমে ক্রমেই এগিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর মতে, নতুন ৪ লাখ মিয়ানমার শরণার্থীর জন্য অন্তত সাত কোটি ৭০ লাখ ডলার প্রয়োজন। ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া ৪০ লাখ ডলার, ডেনমার্ক ৩০ লাখ ডলার দেবে বলে জানিয়েছে। বাংলাদেশের রেড ক্রিসেন্ট বিশ্ব রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সদস্য ১৯০টি দেশের কাছ থেকে এক কোটি ২০ লাখ ডলার আহ্বান করেছে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) যুক্ত হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার ২০ মেট্রিক টন ত্রাণ। এ নিয়ে আটটি চালানে রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৭ মেট্রিক টন ত্রাণ পাঠিয়েছে দেশটি। এর আগে রবিবার আজারবাইজান, তুরস্ক, মরক্কো, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ত্রাণ এসেছে।
গত ১৪ আগস্ট ইন্দোনেশিয়া সরকারের পাঠানো ত্রাণের প্রথম দু’টি চালান চট্টগ্রাম এসে পৌঁছায়। ওই চালানে ২০ টন ত্রাণ সামগ্রী ছিল। যার মধ্যে চাল, তাঁবু, কম্বল ও শুকনো খাবার ছিল। পরদিন ১৫ আগস্ট আরও দু’টি চালান পাঠায় ওই দেশের সরকার। এতে কম্বল,চিনি, কাপড়, পানির ট্যাংক, ফ্যামিলি কিটস ও ১০ মেট্রিক টন চালসহ মোট ১৭ টন ত্রাণ ছিল। গত ১৬ আগস্ট দু’টি চালানে আরও ২০ টন ত্রাণ পাঠায় ইন্দোনেশিয়া।
ইন্দোনেশিয়ার এ দু’টি চালানসহ এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশ থেকে মোট আড়াইশ মেট্রিক টন ত্রাণ চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ভারত দু’টি ফ্লাইটে ১০৭ টন, ইন্দোনেশিয়া আটটি ফ্লাইটে ৭৭ টন, ইরান একটি ফ্লাইটে ৪০ টন, মরক্কো একটি ফ্লাইটে ১৪ টন এবং মালয়েশিয়া একটি ফ্লাইটে ১২ টন ত্রাণ পাঠায়।