বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। আলোচনায় দুই নেতা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাগত দুর্দশা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
শুক্রবারের (১৩ জুন) এই আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর জরুরি প্রয়োজনীয়তা।
গর্ডন ব্রাউন, যিনি বর্তমানে জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ দায়িত্ব ড. ইউনূসের নেতৃত্ব এবং বলিষ্ঠ ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রধান উপদেষ্টার নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
বর্তমানে অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শিশু আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এই পরিস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুতর উল্লেখ করে উভয়ই একটি ‘হারিয়ে যাওয়া প্রজন্ম’ তৈরি হওয়া রোধ করতে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন দুই নেতা।
ড. ইউনূস দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে; যে রোহিঙ্গা শিশুরা আশা এবং একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে বেড়ে উঠছে।’ তিনি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সহযোগিতা লাভে তার সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথাও তুলে ধরেন।
গর্ডন ব্রাউন রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে শিক্ষামূলক কর্মসূচি সম্প্রসারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বিশ্বব্যাপী শিক্ষার প্রসারে তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এবং অ্যাডভোকেসির কথা উল্লেখ করেন। ব্রাউন আরও জানান, তিনি বাংলাদেশে এসে পরিস্থিতি সরেজমিনে মূল্যায়ন করতে এবং সম্ভাব্য সহায়তার পথ অন্বেষণ করতে আগ্রহী।
টেলিফোন সংলাপে অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কার এজেন্ডা এবং বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের ভূমিকাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট আরও কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।